রঙিন পড়ার টেবিল

টেবিল বর্ণিল হলে শিশুর কাছে পড়াটাও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে৷ কৃতজ্ঞতা: সাবিহা কুমু৷ ছবি: নকশা
নতুন বছরে ছোট্ট শিশুটি গুটি গুটি পায়ে প্রথম স্কুলে যাবে। এই নিয়ে মা-বাবার খুশির যেন শেষ থাকে না। শিশুর বই-খাতা, পড়ার টেবিল, টিফিন বক্স থেকে শুরু করে স্কুলব্যাগ—সব কিছুই যেন বিশেষ হওয়া চাই। তবে এত আয়োজন যার জন্য, তাকে কি অত সহজেই পড়ার টেবিলে বশ মানানো যায়? যে শিশু বাড়িতে সারা দিন মেতে থাকে খেলাধুলায়, হঠাৎ করেই তাকে পড়ায় বসানোর কাজটা বেশ কঠিনই বটে। এ জন্য বাবা-মাকে কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে। যেমন ঘরের ভেতরেই এমন একটা পরিবেশের আয়োজন করে দিতে হবে, যেখানে শিশু বেশ মজা নিয়েই পড়তে বসবে। এ বিষয়ে গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের শিশু বিকাশ ও সামাজিক সম্পর্ক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ইসমাত রুমিনা বললেন, শিশুর সঠিক বিকাশের জন্য এবং পড়াশোনার আগ্রহ বাড়াতে বাড়ির পরিবেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্লাসে শিশুদের জন্য নানা ধরনের মজার আয়োজন থাকে। বাড়িতে সেই ধরনের আয়োজন করা যেতে পারে। এ জন্য প্রথমেই পড়ার টেবিলটার দিকে বাবা-মাকে মনোযোগী হতে হবে। এখন বাজারে বিভিন্ন ধরনের কার্টুন আঁকা অথবা এ, বি, সি, ডি লেখা টেবিল-চেয়ার পাওয়া যায়। ছোটদের জন্য যেগুলো বিশেষভাবে তৈরি। ঘরের পর্দাতেও সেই জিনিসগুলো তুলে ধরতে পারেন। বর্ণমালা লেখা বা প্রিয় কোনো কার্টুন আঁকা টেবিল, পর্দা ও বিছানার চাদর শিশুকে পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী হতে সাহায্য করবে। এ ছাড়া পড়ার টেবিলেই বিভিন্ন বুদ্ধিদীপ্ত খেলার আয়োজন রাখতে পারেন।
এদিকে অ্যাস্থেটিক ইন্টেরিয়রের স্বত্বাধিকারী সাবিহা কুমু বললেন, আজকাল অনেক মা-বাবাই শিশুর পড়ার টেবিলের পাশের দেয়ালগুলোকে বইয়ের যেকোনো ছড়া বা গল্প অনুসারে রাঙিয়ে তোলেন। পড়ার বইয়ের বিষয়টি যখন দেয়ালে ফুটে উঠবে, তখন শিশু এমনিতেই মজা পাবে। এ ছাড়া টেবিলের পাশে কেবিনেট করা সম্ভব হলে সেখানে বইগুলো সাজিয়ে রাখার পাশাপাশি শিশুর পছন্দসই খেলনাও রাখতে পারেন। আজকাল প্রায় সব ফার্নিচারের দোকানে শিশুদের জন্য বেড কাম কেবিনেট কিনতে পাওয়া যায়। এতে জায়গা কম লাগে। এ ছাড়া শিশুকে বেখেয়ালি করে তোলে এ ধরনের জিনিস, যেমন টেলিভিশন, ল্যাপটপ শিশুর সামনে না রাখাই ভালো। পড়ার পরিবেশটা আকর্ষণীয় করার পাশাপাশি শিশুকে স্কুলে ভর্তি করানোর আগে থেকেই তাকে মানসিকভাবেও প্রস্তুত করার পরামর্শ দিলেন ইসমাত রুমিনা। স্কুলের নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে ক্লাস শুরু হওয়ার আগে দুই-একদিন শিশুকে স্কুলে ঘুরিয়ে আনা যেতে পারে। গল্পের ছলে স্কুল সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। শিক্ষক সম্পর্কে ইতিবাচক কথা বলতে হবে, যেন শিশুর মনে কোনো ভীতি তৈরি না হয়। এদিকে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে শিশুকে বাড়িতে পড়ার বাড়তি চাপ না দেওয়ার পরামর্শ দিলেন তিনি।
নবীনতর পূর্বতন