লিবিয়ার উপকূলে অভিবাসীদের বহনকারী দুটি নৌকাডুবির ঘটনায় অন্তত ২৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। জাতিসংঘের অভিবাসনবিষয়ক সংস্থা গতকাল বৃহস্পতিবার এ খবর জানিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ডুবে যাওয়া নৌকা দুটির আরোহীরা পশ্চিম আফ্রিকার অধিবাসী।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মুখপাত্র ফ্লাভিও ডি জাকোমো বলেন, লিবিয়া থেকে গত বুধবার স্থানীয় সময় ভোরে একটি রাবারের নৌকায় করে ২০ জন নারী, ৬ শিশুসহ একদল অভিবাসী রওনা হয়। ঘণ্টা খানেক পর নৌকাটি ডুবে যায়। উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই এর অধিকাংশ আরোহী সাগরে ডুবে যায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১২টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ শিশুর লাশ রয়েছে। নৌকাটিতে কত আরোহী ছিল তার উল্লেখ না করলেও সংস্থাটি জানায়, ২৭ জন অভিবাসীকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
একই সময়ে ১৩০ জন অভিবাসীকে বহনকারী আরেকটি ছোট রাবারের নৌকা ভূমধ্যসাগরে ডুবে যায়। এ ঘটনায় দুই নারীকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার মুখপাত্র কারলোসা সামি বলেছেন, উদ্ধারের পর ইতালির লামপেডুসা দ্বীপে পৌঁছানো দুজন অভিবাসী হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে তাঁদের নিশ্চিত করেছেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মুখপাত্র ডি জাকোমো বলেন, লিবিয়ার উপকূলে উদ্ধার কর্মসূচি খুব শিগগির দেশটির কোস্টগার্ডের কাছেই হস্তান্তর করা হবে জানিয়ে অভিবাসীদের প্রতারিত করছে মানব পাচারকারীরা। অভিবাসীদের আশঙ্কা, লিবিয়ার কোস্টগার্ডের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হলে সাগরে উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের ইতালিতে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে লিবিয়ায় ফিরিয়ে নেওয়া হবে। এ কারণেই ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা বলেছে, সর্বশেষ এ দুটি নৌকাডুবির ঘটনাসহ ভূমধ্যসাগরে ডুবে চলতি বছর প্রাণ হারাল ৪ হাজার ২২০ জন।
এদিকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গতকাল এক প্রতিবেদনে বলেছে, কয়েকটি ক্ষেত্রে ইতালি অভিবাসীদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, যা নির্যাতনের পর্যায়ে পড়ে। সংস্থাটি জানায়, নিবন্ধনে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে কোনো কোনো অভিবাসীকে মারধর ও ইলেকট্রিক শক দেওয়া এবং যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এ প্রতিবেদনের ব্যাপারে ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।