আমি রাসেল । ভাল মনের অধিকারী।
ঐ বাড়িতে বেশি বড় হয়ে উঠবার আগেই আমরা বাড়ি ছেড়েছিলাম।
আমার বাবা চাকরি নিয়ে চলে গেলেন বিহারে।
প্রকাণ্ড বাগান ঘেরা বাংলো বাড়িতে এসে আমার সেই পাঁচ সাত বছর বয়সে প্রথম হঠাৎ মনে হয়েছিল- আমার জীবন খুব একার হবে, না, হটাত নয়।
সেই বাড়িতে প্রথম সকালবেলায় আমি বাড়িটা ঘুরে ফিরে দেখতে ছুটে বেরিয়েছিলুম। একা।
সামনে পপি ফুলের বাগান, তারপর ছোট মসৃণ লন, তারপর আগাছা আর রাংচিতার বেড়া।
আমি দৌড়তে দিয়ে থমকে গেলুম-যত যাই ততই একা। কেবল একা।
শিমুলগাছ থেকে হটাত হু-হু করে কেঁদে উঠল একটা কোকিল।
ওরকম ডাক আমি আর কোনদিন শুনলুম না।
হাজার বছরে কোকিল বোধহয় ওরকম একবার ডাকে।
আমি কি আনেক অপোগণ্ড ছেলেমেয়ের ভিড়ে কখনো আমি কোকিলের ডাক শুনেছিলুম বলে মনে পড়ে না।
একা ভোরের ভেজা বাগানে দাঁড়িয়ে আমি প্রথম একটি কোকিলকে ডাকতে এবং কাঁদতে শুনলুম।
সেই মুহূর্তেই একা একটি কোকিল আর তার ডাকের সঙ্গে আমার মিলমিশ হয়ে গেল।
মনে হল আমার জীবন খুব একার হবে।
আমার বাবা চাকরি নিয়ে চলে গেলেন বিহারে।
প্রকাণ্ড বাগান ঘেরা বাংলো বাড়িতে এসে আমার সেই পাঁচ সাত বছর বয়সে প্রথম হঠাৎ মনে হয়েছিল- আমার জীবন খুব একার হবে, না, হটাত নয়।
সেই বাড়িতে প্রথম সকালবেলায় আমি বাড়িটা ঘুরে ফিরে দেখতে ছুটে বেরিয়েছিলুম। একা।
সামনে পপি ফুলের বাগান, তারপর ছোট মসৃণ লন, তারপর আগাছা আর রাংচিতার বেড়া।
আমি দৌড়তে দিয়ে থমকে গেলুম-যত যাই ততই একা। কেবল একা।
শিমুলগাছ থেকে হটাত হু-হু করে কেঁদে উঠল একটা কোকিল।
ওরকম ডাক আমি আর কোনদিন শুনলুম না।
হাজার বছরে কোকিল বোধহয় ওরকম একবার ডাকে।
আমি কি আনেক অপোগণ্ড ছেলেমেয়ের ভিড়ে কখনো আমি কোকিলের ডাক শুনেছিলুম বলে মনে পড়ে না।
একা ভোরের ভেজা বাগানে দাঁড়িয়ে আমি প্রথম একটি কোকিলকে ডাকতে এবং কাঁদতে শুনলুম।
সেই মুহূর্তেই একা একটি কোকিল আর তার ডাকের সঙ্গে আমার মিলমিশ হয়ে গেল।
মনে হল আমার জীবন খুব একার হবে।
সেই ভোরবেলাটির কথা আজও আমার খুব মনে পড়ে।
ঐ রকম একটি কোকিলের ডাক কিংবা আরও তুচ্ছ একটি দুটি ঘটনা থেকে আমরা আবার নতুন করে আমাদের যাত্রা শুরু করি।
করি না। আমার এতদিনের বিশ্বাস ছিল-আমার জীবন খুব একার হবে।
ঐ রকম একটি কোকিলের ডাক কিংবা আরও তুচ্ছ একটি দুটি ঘটনা থেকে আমরা আবার নতুন করে আমাদের যাত্রা শুরু করি।
করি না। আমার এতদিনের বিশ্বাস ছিল-আমার জীবন খুব একার হবে।
আমি আমার বাবাকে সাদা জিনের প্যান্ট পরে খেলতে দেখেছি।
তবু বাবার ছিল সাধু-সন্ন্যাসী জ্যোতিষ আর তুকতাকের বাতিক।
খুব লম্বা সুন্দর সাদা চেহারার এক ভদ্রলোক, যার পরনে গেরুয়া আলখাল্লা আর চোখে সোনার ফ্রেমের চশমা,
আমাকে দেখে বলেছিলেন - এ ছেলের স্বাভাবিক ছবি আঁকার হাত আছে।
এর মন একটু দার্শনিক।
বলে তিনি চুপ থেকেছিলেন।
বাবা প্রস্ন করলেন - আর ?
উনি হেসে বললেন একটু দেখে রাখবেন এ ঘর ছেড়ে পালাতে পারে। সন্ন্যাসের দিকে খুব টান।
- আর ? বাবার ভ্রু কুঁচকে উঠল। দরজার আড়ালে মা ছিল। হটাত তার হাতের চুড়ির ঝনাৎ শব্দ হয়েছিল।
আমি বুঝেছিলুম, আমি সেই বয়সেই বুঝেছিলুম, লোকটা ভুল কথা বলছে না।
উনি একটু ভেবে বললেন, ওকে খুব সবুজের মধ্যে রাখবেন।
ওর পোশাক যেন হয় সবুজ, ওর খাবারের মধ্যে বেশির ভাগ যেন হয় সবুজ রঙের, ওর চিন্তায় সবুজের যেন বেশি থাকে দেখবেন।
তার পরদিনই রঙ সাবান কিনে এনে মা আমার সমস্ত পোশাক সবুজ করে তুলেছিল।
রাশি রাশি শাকপাতা অনিচ্ছায় খেতে হত আমাকে।
লুডো খেলতে বসেছি, মা ছুটে এসে বলত - সুমন - বাবা, তুই সবুজ ঘর নে।
বাড়িতে পোষা বুলবুলি ছিল, তার পাশে এল একটা টিয়াপাখি।
জন্মদিনে এক বাক্স জল রঙ কিনে দিয়ে মা বলল - কেবল গাছপালার ছবি আঁকবি।
তবু আমার জানা ছিল যে, আমার জীবন খুব একার হবে।
সবুজ রঙের ভিতরেও একটা উদাসীন মমতা আছে। আমার মা কিংবা বাবা তা ধরতে পারেনি।
পরবর্তী অংশ পড়ার আবেদন রইল...
ভাল থাকবেন।