Life Style--- অভিনেত্রী জয়া আহসানের কাছে বৈশাখ মানেই নানা রং

অভিনেত্রী জয়া আহসানের কাছে বৈশাখ মানেই নানা রং। পছন্দ করেন দেশি পোশাক। তবে কাটছাঁট আর উপস্থাপনায় চান আন্তর্জাতিক সমসাময়িক ধারা। বৈশাখ নিয়ে নকশার বিশেষ আয়োজনে নিজের স্টাইলেই তুলে ধরলেন বৈশাখের নানা সাজ।
‘পয়লা বৈশাখ, চারদিকে কত উজ্জ্বল রং, তখন কি আর দুটি রঙে নিজেকে বেঁধে রাখা যায়? তাই এই দিনটায় বর্ণিল পোশাকে রঙিন সাজটাই আমার বেশি পছন্দ।’ বাংলা নববর্ষের সাজপোশাক নিয়ে এই কথাগুলোই বললেন অভিনেত্রী জয়া আহসান।
 লিপস্টিক, রোদচশমা, দুল ও আংটি যখন ভিন্ন—লুক তো তখন আধুনিক হবেই। শাড়ি: দেশাল, ব্লাউজ: ড্রেসিডেল, অনুষঙ্গ: সিকোসো, স্থান: যাত্রা বিরতিলিপস্টিক, রোদচশমা, দুল ও আংটি যখন ভিন্ন—লুক তো তখন আধুনিক হবেই। শাড়ি: দেশাল, ব্লাউজ: ড্রেসিডেল, অনুষঙ্গ: সিকোসো, স্থান: যাত্রা বিরতিপয়লা বৈশাখ সামনে রেখে নকশার এই প্রচ্ছদ প্রতিবেদনের ফটোশুটের জন্য কিছুদিন আগে জয়ার সময় চাওয়া হলো। সময় দিলেন জয়া আহসান। পোশাক কী হবে এই নিয়ে যখন তাঁর সঙ্গে কথা হচ্ছিল তখন জানালেন, বৈশাখে নিজেকে একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে চান। পোশাকে দেশি কাপড় ও মোটিফের ব্যবহার থাকবে তবে কাটছাঁটে একটু ফিউশন পছন্দ করেন জয়া। ‘আধুনিকতার সঙ্গে ঐতিহ্যের মিশেল আছে বৈশাখে এমন সাজপোশাক আমার পছন্দ’—বললেন জয়া।
শাড়ি জয়া আহসানের খুবই পছন্দের। স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন সুতি, চেক আর ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর তাঁতশিল্পীদের হাতে বোনা শাড়িতে। হাতে আঁকা শাড়ির প্রতিও রয়েছে তাঁর দুর্বলতা। কথার ফাঁকে ফাঁকেই জানালেন, এই বছর অনেক মণিপুরি শাড়ি উপহার পেয়েছেন। বৈশাখের সকালে এখান থেকেই একটা শাড়ি পরবেন।
 শার্ট, ব্লাউজ ও বেল্ট একরঙা সুতি শাড়িতে নিয়ে আসবে ভিন্নতা।শার্ট, ব্লাউজ ও বেল্ট একরঙা সুতি শাড়িতে নিয়ে আসবে ভিন্নতা।পয়লা বৈশাখ দিনটি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাটাতে ভালোবাসেন। কাজের প্রয়োজনে প্রায়ই দেশের বাইরে থাকতে হয়। কিন্তু যত কাজই থাকুক না কেন বৈশাখের প্রথম দিনে দেশে সময় কাটানোর চেষ্টা করেন জয়া। একটা মজার তথ্যও দিলেন জয়া আহসান। জানালেন, তাঁর হাতেমাখা পান্তাভাতের গল্প। ঘুম থেকে উঠেই বসে যান পান্তাভাত মাখাতে। ছোলা, বাসি তরকারি, শুঁটকিভর্তা—এমন আরও পদ দিয়ে সুস্বাদু করে তোলেন পান্তাকে। জয়া বলেন, ‘জানেন এই দিন শুধু আমার হাতে মাখানো পান্তাভাত খেতেই অনেকে বাসায় বেড়াতে আসেন।’ নানা ধরনের বাসনকোসন সংগ্রহের প্রতি রয়েছে তাঁর বিশেষ ঝোঁক। তার মধ্যে আছে মাটির বাসনকোসনও। এসব বাসনকোসনেই চলে পয়লা বৈশাখের খাবার পরিবেশন।
 পয়লা বৈশাখের সকাল শুরু হবে মণিপুরি শাড়ি পরেই। এরপর একেক বেলায় পরবেন একেক পোশাক। ‘বৈশাখে এত উপহার পাই যে সেখান থেকে বেছে বেছে পোশাক পরি। সকালে এটা তো বিকেলে ওটা।’ শাড়ির পাশাপাশি কোনো একবেলায় তাই জয়া পরবেন ফিউশনধর্মী পোশাক। সেটা ম্যাক্সিও হতে পারে আবার ধুতি টপের সঙ্গে লম্বা মসলিনের জ্যাকেটও হতে পারে।
নানা মাপের বেণীতে সাজিয়েছেন চুলনানা মাপের বেণীতে সাজিয়েছেন চুলপোশাকের সঙ্গে গয়না পরতে ভালোবাসেন জয়া আহসান। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্যদের তৈরি গয়নার প্রতি একটা টান রয়েছে তাঁর। ভালোবাসেন বিভিন্ন ধরনের উজ্জ্বল বিডস আর রুপার গয়না। বৈশাখে সবার জন্য কমবেশি উপহার কিনে থাকেন। এই কেনাকাটাটা দেশেই করেন। এ জন্য আড়ং, দেশাল, বিশ্বরঙ তাঁর পছন্দ।
সাজে সহজাত ভাব বা লুক রাখতে পছন্দ করেন। তবে লিপস্টিকে গাঢ় রং তাঁর পছন্দ। সব সময় নিজেকে একটু আলাদাভাবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করেন। যেমন ফটোশুটের সময় সাদাকালো চেক শাড়ির সঙ্গে পরলেন হাতাকাটা ব্লাউজ। পায়ে কালো জুতা। গলায় ফুলের চোকার আর দুই হাতে রুপার চুড়িতেই অনন্য হয়ে উঠলেন জয়া। কিংবা হাওয়াই মিঠাই রঙের শাড়ির কথাই ধরি। দেশালের একরঙা এই তাঁতের শাড়ির সঙ্গে জয়া পরলেন একটু ঢিলেঢালা অনেকটা শার্টের কাটে তৈরি ব্লাউজ। কাপড়ে সাইকেল মোটিফের নকশা। ঠোঁটে বেগুনি লিপস্টিক, চোখে রোদচশমায় ব্যতিক্রমী জয়া।
পোশাকের উপকরণ হিসেবে গরমের সময় সুতিতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন জয়া আহসান। বললেন, ‘সুতির ঢিলেঢালা পোশাকই গরমে আমাকে বেশি আরাম দেয়। চুল বাঁধায় বিশেষ কোনো স্টাইল সব সময় করি না। পোশাকের সঙ্গে যখন যেটা মানায় সেটাই করে থাকি।’
এক গালে আঁকা লাল জবা ফুল। গলায় বিভিন্ন ধরনের মালা পরলেও, বাড়তি মনে হচ্ছে না।







এক গালে আঁকা লাল জবা ফুল। গলায় বিভিন্ন ধরনের মালা পরলেও, বাড়তি মনে হচ্ছে না।নীলরঙা ধুঁতি কাটের সালোয়ার, সঙ্গে ছোট টপ, ওপরে মসলিনের জ্যাকেট, মুখে আঁকা ছবিতে জবা ফুলের নকশা আর হাত ভর্তি কাচের চুড়ি জয়ার সাজে এনেছে বৈশাখী আমেজ। ছবি তোলার ফাঁকে ফাঁকে জয়া বলছিলেন, ‘আমি এমনই। একটু চঞ্চল, হিপ-হপ আবার কখনোবা একটু বোহিমিয়ান।’ সেটা অবশ্য কিছুক্ষণের মধ্যেই বোঝা গেল। যখন রাস্তার ধারে ফলের দোকান দেখেই জয়া আহসান বললেন, ‘এখানে ছবি তুললে কেমন হয়?’ রোদের মাঝখানে গাড়ি থেকে নেমে রাস্তায় লোক সরিয়ে নিজেই দাঁড়িয়ে গেলেন ছবি তুলতে। ‘জানেন, ছবি তোলার জন্য রিকশার গ্যারেজ, মাছের আড়ত—এসব জায়গা বেশ ভালো।’
বোঝা গেল, শুধু সাজপোশাকেই নয়, সবকিছুতেই নতুনত্বের ছোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা করেন এই অভিনেত্রী।
أحدث أقدم