রাঙ্গামাটিতে ‘এক্সক্লুসিভ ট্যুরিজম জোন’ বা ‘বিশেষ পর্যটন অঞ্চল’ গঠন করছে সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে। এ লক্ষে ১২শ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। এর মাস্টার প্লানসহ ডিপিপি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। বর্তমানে প্রকল্পটি মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায়। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের প্রথম দিকে রাঙ্গামাটিতে বিশেষ পর্যটন অঞ্চল গঠনের উদ্যোগ নেয় সরকার। সরকারের নির্দেশনায় এর মাস্টার প্লান তৈরি করে তা বাস্তবায়নে ১২শ’ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। ২০১৭ সালের ২৯ মে সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী আবদুস সামাদ জানান, প্রকল্পটি বর্তমানে মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায়। যাচাই-বাছাই প্রায় শেষ। এ নিয়ে সভা করে অনুমোদন দেবে মন্ত্রণালয়। তিনি জানান, সম্ভাবনাময় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশে ‘এক্সক্লুসিভ পর্যটন জোন’ গঠনে সরকারের পরামর্শে এর একটি মাস্টার প্লান তৈরি করে নক্শা ও খসড়াসহ ১২শ’ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনা পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এর আগে গত বছরের শুরুর দিকে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বিভিন্ন মহলের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। সেমিনারের প্রস্তাবনা অনুযায়ী ২০১৭ সালের ২৯ মে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, রাঙ্গামাটিতে বিশেষ পর্যটন অঞ্চল গঠনে সদরসহ জেলার ১০ পয়েন্টে পর্যটন স্থাপনা নির্মাণের নক্শাসহ মাস্টার প্লান তৈরি করা হয়েছে। শহরের ফিশারিঘাট থেকে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সংযোগ সড়কের দুই পাশে পর্যটকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের গ্যালারি নির্মাণ, উভয় দিকের আশেপাশের দ্বীপগুলোকে সংযুক্ত করতে আধুনিক মানের ক্যাবল ব্রিজ নির্মাণ ও ক্যাবল কার সংযোগ স্থাপন করা হবে।
এছাড়া কাপ্তাই হ্রদের ভাসমান টিলাগুলোতে রেস্টুরেন্ট ও গেস্ট হাউস নির্মাণ, শহরের পর্যটন মোটেল এলাকায় আধুনিক মানের বিনোদন স্পট, সুইমিং পুল, ক্যাবল কার সংযোগ স্থাপন, প্যাডল বোট, ওয়াটার ট্যাক্সি চালু, শহরের জিরো পয়েন্টের লাভপয়েন্ট স্পট উন্নয়ন, লুসাই পাহাড়ে আবাসিক গেস্ট হাউস নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি বালুখালী হর্টিকালচার এলাকায় কমিউনিটি সেন্টার ও ক্যাবল ব্রিজ নির্মাণ, শহীদ মিনার এলাকায় ৪০ কক্ষের একটি আবাসিক হোটেল নির্মাণ, সুবলং ঝরনা স্পট উন্নয়ন এবং নির্বাণপুর বৌদ্ধ বিহার স্পট উন্নয়নে কাজ করা হবে।
শহরের প্রবেশমুখ মানিকছড়ি এলাকায় পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কে গ্যালারি স্টেট ভিউ সাইট, ঘাগড়ায় ক্যাফেটরিয়া এবং কাপ্তাই নতুনবাজার এলাকায় থ্রি স্টার হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।