ভালবাসার গল্প --আজ আমি খুবই খুশি কারণ আজ আমি বাবা হলাম

Image result for father and son pictures
আজ আমি খুবই খুশি কারণ আজ আমি বাবা হলাম তাও একসাথে চারজন ছেলেমেয়ের বাবা। ভাবতেই অবাক লাগতেছে। এত খুশিযে কোথায় রাখব খুজে পাচ্ছি না।
-----
অহ আপনারা কিছুই বুঝতাছেন না। এটাই স্বাভাবিক। আচ্ছা একটু ওয়েট করেন বাচ্চাদের মা-দের সাথে একটু কথা বলে তাদের কাছে বাচ্চা গুলি কে দিয়ে আসতেছি। আর মিষ্টি কিনতে যেতে যেতে আপনাদের সব বুঝিয়ে বলতেছি।
-------
চলেন মিষ্টির দোকান এ। আরে আরে আপনাদের না ত। আমাদের গাড়ির ড্রাইভারকে বললাম।
যেতে যেতে আপনাদের সব ক্লিয়ার করে বলতেছি।
-------
আমি মুশফিকুর রহমান (শুভ)। সংক্ষেপে MS. আমি পড়ালেখা শেষ করে একটি কোম্পানিতে মোটামোটি ভাল সেলারির একটি জব করি।
আমার বাবা একজন বড় ব্যাবসায়ী। দুটি কোম্পানির মালিক। তবুও আমি তার কোম্পানিতে এত তারা তারি কাজ করতে চাই না। তাই আমি নিজের যোগ্যতা দিয়ে যেখানে জব পেয়েছি সেখানে চাকরি করতেছি। এবং আমি সাধারণ ভাবে থাকতে ভালবাসি।তাই বাসে যাতায়াত করি।
এখন মূল গল্পে আসা যাক।
---
একদিন মাত্র বাসে গেটে উঠেছি তখনি পিছনে দেখালাম একটি মেয়ে দৌড়ে আসছে। ভাগ্যবশত কন্ডাক্টর বাসের পিছনে ছিল। আর জানেন ই ত ঢাকায় গাড়ি দৌড়ের ওপর থাকে। ত আমি ড্রাইভার কে বললাম আংকেল একটু অয়েট প্লিজ কিন্তু পিছনে গাড়ির জন্য ওয়েট করতে পারছিল না। মেয়েটি দৌড়ে গাড়ির প্রায় কাছাকাছি তখনই গাড়িটির স্প্রিড একটু বেড়ে যায়। আমি তখন জানি না কি ভেবে যেন হাত টা বাড়িয়ে দিলাম এবং মেয়েটি ও অবাক করে আমার হাত টি ধরে ফেললো তখনি পিছনের জানলা দিয়ে কলেজ ছাত্র মাথা বের করে বলতেছে ' ভাগ সিমরান ভাগ, জিলে আপনি জিন্দেগী '।
আমি কোনমতে টেনে উঠালাম। তারপর মনে মনে সেই গান " তুঝে দেখা ত ইয়ে জানা সানাম,পিয়ার হতা কিয়া হে দিবানা সানাম"।
মেয়েটি বলল অনেকক্ষন ধরে ওয়েট করতেছিলাম কিন্তু গাড়ীটি আসতেছিল না। এটা মিস করলে জানি না আর ও কত লেইট হতো তাই এভাবে দৌড়ে এসে উঠলাম। আমি বললাম ইটস ওকে। আমি ভিতরে কন্ডাক্টর কে বললাম ভাই দেখেন ত কোন সিট খালি আছে কিনা?। তখন বলল না তবে একটু পর খালি হবে সামনে থেকে একজন বলল আমি সামনে ই নামব। আমি তখন বললাম ভাইয়া একটু কষ্ট করে উঠে আপুটিকে বসতে দিবেন প্লিজ। তখন লোকটি বলল অবশ্যই আসুন। আপনি সিটে গিয়ে বসে পড়ুন এভাবে বাসের গেইট আপনার মুখোমুখি দারিয়ে থাকতে লজ্জা লাগছে। মেয়েটি ও লজ্জা পেয়ে উপরে উঠে সিটে গিয়ে বসল। সেদিন আর কথা হয় নি।আমি আমার স্টপেজ এ নেমে গেছি। মেয়েটি মনে হয় আর ও দূরে যাবে।
-----
তার পর আবার একদিন অফিসে যাওয়ার সময় মেয়েটির সাথে দেখা হল।কিন্তু আজ সেভাবে না। মেয়েটি সিটে ই বসা ছিল। জানি না দেখছে কিনা। পাশের সিট টা খালি ই ছিল কিন্তু বসতে সংকোচ বোধ করতে ছিলাম তাই পিছের দিকে যাচ্ছিলাম তখনই কে যেন হাত ধরলো। আমি তাকিয়ে ত অবাক মেয়েটি হাত ধরলো কিন্তু আমার দিকে না তাকিয়েই হাত ধরে টান দিয়ে তার পাশে বসাল।
এরপর মেয়েটি বলল সরি। আমি বললাম কেন তখন বলল সেদিন এত কিছু করলেন পরিচয় টা জানতে পারলাম না আর ধন্যবাদ টি ও দিতে পারলাম না।
আমি বললাম ইটস অকে।ত এখন পরিচিত হতে পারি আমরা।
হ্যা অবশ্যই।
আমি আনহা। অনার্স ১ম বর্ষে পরতেছি।আমাদের বাসা অমুক যায়গায়। আমার বাসায় আমার বাবা মা আর এক বোন আছে।
এখন আপনি বলুন।
আমি ও বললাম সত্যি মিথ্যা দিয়ে পরিচয় টা। আনহা আমার আগে ই নেমে গেল নামার আগে তার এফবি আইডিটা জেনে নিলাম।
নামার সময় একটি মুচকি হাসি দিল। যা আমার হার্ট কে ভাইলেন্ট করে দিয়ে গেল
----
অফিসে কোন কাজে মন বসতেছিল না ভাল লাগতেছিল না। শুধু আনহার মুখ টি ভেসে যাচ্ছিল সামনে দিয়ে। পাশের মেয়ে কলিগ দের দিকে তাকালেই মনে হয় সেটা আনহা। তাই কিছু ঘটার আগেই বের হয়ে বাসায় এসে পরলামম। কিন্তু আসার সময় আর আজ আনহার সাথে দেখা হই নাই।
-----
রাতে এফবি তে গিয়ে আইডি টা খুজে বের করলাম। কিন্তু দুটি আইডি এক সাথে একই নামে একই প্রোফাইল পিক। তখন একটায় আনহার পিক দিয়া আছে তার ফেন্ড দের সাথে। ত সেটাই রিকু দিলাম এবং অপেক্ষায় থাকলাম এবং একটু পর এক্সেপ্ট হলো।
(( আমার প্রোফাইল এ কোন পিক দিয়া ছিল না আর আমি গল্প লিখতাম। আমি ভাবলাম যে মেয়েটিকে একটু টেষ্ট করা যাক দেখি কেমন তাই অপরিচিত ই থাকলাম তার কাছে।))
----
কথা বলতে বলতে এফবিতে ভাল ফ্রেন্ড হয়ে গেলাম আমরা। আর অর নাকি আমার গল্প অনেক ভাল লাগত। অনেক কেয়ার করত আমাকে। এগুলা আমার অনেক ভালো লাগত। ওই আমাকে দেখতে চেয়েছিল কিন্তু আমি বলছিলাম এখন না একটি সারপ্রাইজ এর মাধ্যমে দেখা করবো। নাম্বার ও চেয়েছিল কিন্তু দেইনি। এইভাবে এফবিতে ওর সাথে দুষ্টু মিষ্টি ভাবে চলতে থাকলাম।
----
অপরদিকে আনহার সাথে আমার সরাসরি দেখা হতে লাগল এবং বলেছিল এফবি তে রিকু দিয়েছিলাম কিনা?
আমি তখন না বললাম এবং বললাম যে এফবি চালাই না। তখন ওর কাছে থেকে নাম্বার টা নিয়ে আসলাম।
আমরা ভাল ফ্রেন্ড হয়ে গেলাম। প্রায় ফোনে কথা হতো। ফোনে ও তানহা ঠিক এফবির মত না এফবির থেকেও বেশি কেয়ার করত। সবসময় একসাথে গেতাম, আসতাম, ঘুরতাম।
----
একদিন আনহাকে বললাম যে সে কি কাওকে ভালবাসে নাকি???
তখন বললো যে হ্যা, সে একজনকে অনেক ভালবাসে।
(তখন গোলমাল এগেইন এর অজয় দেবগন জানল তার প্রেমিকা ভূত তখন ক্যামেরা নিয়ে যে ঘুরনি টা মারল আমার ও সেই অবস্থা। ঘুরতাছি আর ঘুরতাছি।)
আনহা বলতাছে সবসময় পাশে থাকে অনেক কেয়ার করে। ইটিসি ইটিসি।
আমি গান গাওয়া ধরলাম মনে মনে ফাইটা যায় বুকটা ফাইটা যায়।আমার চোখের সামনে দিয়ে হাইটা যায়, ফাইটা যায়।
বাহ ভাল গান পারেন ত। কিন্তু এমন ফাইটা যাওয়া গান গাইতাছেন কে?
অহ শিট মনে মনে এত জোরে গাইলাম যে ও শুনে ফেলল।
সেদিন আর কিছু না বলে এসে পরলাম।
--
স্যার এসে পরেছি । মিষ্টির দোকান এ আইয়া পরলাম। গিয়ে ৫০ কেজি রসগোল্লা অর্ডার করলাম।
--
আপনারা কি দেখেন। কেমন লাগল এতটুকু জানাইবেন। না জানাইলে কিন্তু
মিষ্টি ও দিমু না আর বাকিটুকু ও কমু না।
আর বাকিটুকু তে ই আসল কাহিনি।
আমি কইটা মিষ্টি খাইয়া নেই। বলেন কেমন লাগল নয়ত যাওয়ার সময় বাকিটুকু বলব না। উলটা মিষ্টি দেখাইয়া দেখাইয়া খাইতে খাইতে যামু।

- ঠিক আছে ব্রেকআপ। কান খুলে শুনে রাখ। ভুল করেও আর ফোন দিবিনা। ওকে?
অরুণার বলা শক্ত কথাগুলো শুনে রুদ্রও গলা ফাটিয়ে বলল,
- ওকে ওকে ওকে। লক্ষ বার ওকে। এখন ফোনটা রাখ। আমাকে মুক্তি দে। অনেক সহ্য করেছি আর না।
- কয়েক সেকেন্ডেই তোর চেয়ে ভাল হাজারটা ছেলের সাথে প্রেম করতে পারি। তোর কত সৌভাগ্য, আমার মত মেয়ের সাথে রিলেশন করতে পেরেছিস।
- ঠিক আছে ঠিক আছে। আমিও দেখাব আমি কি করতে পারি। কয়টা মেয়েকে পেছনে ঘুরাতে পারি।
২.
টুট টুট শব্দে ফোনের লাইন কেটে গেল। রুদ্র ল্যাপটপ অন করে ফেসবুক পাসওয়ার্ড চেইঞ্জ করল। এলোপাথাড়ি ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠাতে লাগল। কিছুক্ষণের মধ্যেই কয়েকটা মেয়ের সাথে চ্যাটিং শুরু হল। রুদ্র কার মেসেজের কি রিপ্লাই দিচ্ছে তার কোন ঠিক নেই। তার একটাই উদ্দেশ্য, মেয়ে দেখতে যতই আনস্মার্ট হোক, বাজে হোক, তাকে প্রেমে ফেলতেই হবে। নিজেকে প্রমাণ করতে হবে, আমিও পারি! ফোন বন্ধ করে সারারাত ধরে চ্যাটিং চলল হরেক রকমের মেয়েদের সাথে। সকাল হয়ে এল। তবুও চ্যাটিং শেষ হয়না। কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে দুই তিনটা মেয়ের সাথে বেশ ভাব জমে গেল তার। সেই সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত সিগারেট ছাড়া পেটে আর কিছুই ঢোকেনি। রুদ্র ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।
৩.
যার সাথে ব্রেকআপ হয়ে গেছে তার কাছে পাসওয়ার্ড রাখার মানেই হয়না। অরুণাও ফেসবুকে পাসওয়ার্ড চেইঞ্জ করল। মেসেঞ্জারে গিয়ে অসংখ্য আনসিন করা মেসেজের রিপ্লাই দিতে লাগল। ছেলেরা তো যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেল। অরুণা রিপ্লাই দিয়েছে! তাও আবার পাঁচ মাস পর! এর চেয়ে বড় আনন্দের বিষয় আর কি হতে পারে! সারারাত ধরে কাকে কি রিপ্লাই দিল তার কোন ঠিক নেই। অবশেষে চোখজোড়া ঘুমে আচ্ছন্ন হল।
৪.
সকাল গড়িয়ে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে বিকেল, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামল। দুজনই তাদের কাজ খুব মনযোগের সাথে করতে থাকল। কেউ কাউকে ফোন দিল না। নতুন প্রেমে ডুবে যাবার প্রতিযোগিতায় দুজন মগ্ন। যেভাবেই হোক আরেকটা প্রেম করতেই হবে। ওকে ভুলে থাকতেই হবে। জিদ চেপে যায় অরুণার, চাপে রুদ্রর মনেও।
চার পাঁচ দিন কেটে গেল। রুদ্রর কেন জানি আর এসব ভাল লাগছেনা। লগইন করা মাত্রই অজস্র মেসেজ, রিপ্লাই দিতে গেলে আবার পুরোনো মেসেজ পড়তে হয়। কাকে কি বলে রেখেছে তার কি কোন ঠিক আছে? ফিল্টারিং করতে করতে অবশেষে দুই তিনটা মেয়েকে পেল। যাদের সাথে কথা অনেকদূর পর্যন্ত এগিয়েছে। কিন্ত আজ কেন যেন অরুণার কথাই বারবার মনে পড়ছে। খুব ইচ্ছে হচ্ছে যোগাযোগ করতে। রুদ্র দোটানায় পড়ে যায়। নাহ, যোগাযোগ করব না। কিন্তু তবুও কি যেন ভেবে ফেসবুকে অরুণাকে মেসেজ দিতে গিয়ে দেখল মেসেজ ব্লক! ফোনে মেসেজ দিল বাট ডেলিভারি নোটিফিকেশন আসল না। এদিকে নব্য মেয়েদের মেসেজ আসছেই। কিন্তু তাতে কোন মনযোগ নেই রুদ্রর। কল দিল অরুণাকে। কল ঢুকল, কিন্তু রিসিভ হল না। বহু চেষ্টার পর কল রিসিভ হল। রুদ্র কি বলবে বুঝতে পারছে না। নিজেকে লজ্জিত মনে হল। ক'দিন আগেই ব্রেকআপ, আর আজ নিজেই স্যারেন্ডার করছে অরুণার কাছে। ব্যাপারটা বেশ অস্বস্তিকর মনে হল রুদ্রর।
ফোন কানে ধরে চুপ করে আছে সে। অরুণাও চুপ করে আছে। প্রায় এক মিনিট লাইনে আছে, কারো কোন কথা নেই। রুদ্র লজ্জা ভেঙে মৃদু কন্ঠে হ্যালো বলতেই অপর প্রান্ত থেকে অরুণার হা হা হি হি হাসি। নিজেকে খুব বিব্রত মনে হল রুদ্রর। অরুণা হাসি থামিয়ে বলল, আমিও কাল থেকেই ভাবছি তোমাকে ফোন করব, বাট সাহস পাচ্ছিলাম না। সত্যিই তোমাকে ছাড়া থাকা যায়না, থাকতে পারিনা। অরুণা একটু থেমে বলল, এটা কততম ব্রেকআপ গেল মনে আছে?
- হুম, উনচল্লিশ তম।
- ওকে চল্লিশতম ব্রেকআপের জন্য রেডি হও।
রুদ্র বলল, তোমার সাথে লক্ষবার ব্রেকআপ করতে চাই, বারবার এভাবে ফিরে আসার জন্য।
---------- আসা যাওয়া-----------
নবীনতর পূর্বতন