পূর্ণ বয়সে আক্কেলদাঁত অনেক সময় উঠতে গিয়ে পর্যাপ্ত স্থান না পেয়ে চোয়ালের ভেতরে বা নিচের দিকে গজাতে পারে। এটা স্বাভাবিকভাবে বেরোতে না পারলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন ব্যথা, প্রদাহ, অন্য দাঁতের ক্ষতি ইত্যাদি। আক্কেলদাঁত অনেক সময় পাশের দাঁতে ধাক্কা বা চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এ সময় মাড়ির প্রদাহের কারণে ব্যথা হতে পারে। যখন আক্কেলদাঁত সম্পূর্ণ উঠতে পারে না, তখন দাঁতের মুকুট অংশটি উপরিভাগের মাংস বা মাড়ির নিচে থাকে। তখন মাঝখানে খাবারের কণাগুলো জমে থাকে এবং সেখানে ধীরে ধীরে অসংখ্য রোগজীবাণু জন্ম নেয়। এতে মাড়িতে প্রদাহ হয়। ফলে মাড়ি ফুলে যায়, তীব্র ব্যথা হয় এবং ওপরের দাঁতের সঙ্গে মাড়ির ক্রমাগত ঘর্ষণ বা কামড়ে ঘা, ক্ষত তৈরি হয়।
চোয়ালের ভেতরে অবস্থানকারী একটি আক্কেলদাঁত অন্য সব কটি দাঁত পড়ে যাওয়ার পর বেরিয়ে আসতে পারে। ফলে নিচের পাটির দাঁতের নিচে ব্যথা বা প্রদাহের আশঙ্কা থাকে।
মাড়ির দ্বিতীয় দাঁতটি ক্রমাগত ধাক্কা খেতে খেতে একদিকে হেলে পড়তে পারে। তা ছাড়া দুই দাঁতের সংযোগস্থলে খাদ্যকণা জমা থাকায় প্রদাহ হতে পারে। এতে চোয়ালের সামনের দিকের দাঁতগুলো বিচ্ছিন্ন বা আঁকাবাঁকা হয়ে যেতে পারে। পরবর্তী সময়ে যেসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে, সেগুলো হচ্ছে—
(১) মাড়ির প্রদাহ বা সংক্রমণ, (২) হাড়ের প্রদাহ, (৩) দাঁতের ক্ষয় এবং (৪) স্নায়ুর ওপর চাপ।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
মুখের ভেতরটা নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে, যাতে আক্কেলদাঁত ও নরম মাংসখণ্ডটির মাঝখানে কোনো খাদ্যকণা না জমে। প্রতিবার খাওয়ার পর নিয়মিত অল্প গরম লবণ পানিতে কুলকুচি করলে প্রদাহ হওয়ার ঝুঁকি কমে। তবে স্বাভাবিকভাবে দাঁত বের হয়ে না আসা পর্যন্ত স্থায়ীভাবে নিরাময় সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে যদি এক্স-রের মাধ্যমে লক্ষ করা যায় যে আক্কেলদাঁতটির অবস্থান খুবই অস্বাভাবিক বা কখনোই স্বাভাবিকভাবে বের হওয়ার আশঙ্কা নেই অথবা পাশের দাঁতটি ডেন্টাল ক্যারিজে আক্রান্ত, তখন সেটা তুলে ফেলাই ভালো। আক্কেলদাঁত ওঠার সময় অতিরিক্ত প্রদাহ সৃষ্টির ফলে মুখ হাঁ করতে অসুবিধা হলে বা মুখের একটি অংশ ফুলে গেলে এবং গাল ও চোয়ালের অংশসহ গ্ল্যান্ড আক্রান্ত হলে মেট্রানিডাজল ও পেনিসিলিন-জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা নিরাপদ।