পা ঠান্ডা হয়ে যায়, হাঁটলে পায়ে ব্যথা করে। মনে হয়, পায়ের রগে সমস্যা। আবার কেউ বলেন, রক্ত চলে না। রগ বন্ধ হয়ে গেছে। কারও আবার হঠাৎ রগে টান পড়ে। শরীরের ওই অংশ অনুভূতিশূন্য মনে হয়। এমন নানা উপসর্গ আছে। আসলে সাধারণ মানুষ রগ বলতে কখনো রক্তনালি, কখনো স্নায়ু, কখনো-বা মাংসপেশির সঙ্গে যুক্ত টেনডনের সমস্যাকে বোঝান। উপসর্গ অনুযায়ী বুঝে নিতে হয় সমস্যাটা কোথায়।
আমাদের শরীরে মূলত দুই ধরনের রক্তনালি আছে: ধমনি ও শিরা। ধমনি ও শিরাগুলো তাদের ছোট-বড় অগণিত শাখা-প্রশাখা, উপশাখাসহ বিন্যস্ত। দুই ধরনের রক্তনালিতেই নানা রকম ব্যথা হতে পারে। যেমন পায়ের ধমনিতে বাধা তৈরি হওয়ার কারণে রক্ত চলাচলে বিঘ্ন ঘটে এবং হাঁটতে গেলে পায়ে ব্যথা শুরু হয়।
শিরার ভেতরে রক্ত জমাট বেঁধে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হলে পা ফুলে যায় ও ব্যথা করতে থাকে, যাকে বলে ডিপ ভেনাস থ্রম্বোসিস। আবার চামড়ার নিচের শিরা আঁকাবাঁকা হয়ে ফুলে যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে একজন রক্তনালি বিশেষজ্ঞ সমাধান দিতে পারেন।
অনেকে স্নায়ুর সমস্যাকেও রগের সমস্যা বলে অভিহিত করেন। স্নায়ু আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে, কেটে-ছিঁড়ে যেতে পারে। হাড়ের যে ছিদ্রপথ দিয়ে সেগুলো বের হয় বা প্রবেশ করে, সেখানে চাপ তৈরি হতে পারে। আর এসবের বহিঃপ্রকাশ ঘটে শরীরের আক্রান্ত অংশে ব্যথা, জ্বালাপোড়া, অবশভাব ইত্যাদি উপসর্গের মাধ্যমে।
নানা কারণে মাংসপেশিতে টান পড়ে, অনেক সময় মাংসপেশির ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়ে মাংসপেশি শক্ত হয়ে যায়। শরীরের নানা ভুল ভঙ্গির কারণেও মাংসপেশিতে টান পড়ে। যেমন দীর্ঘ সময় একই ভঙ্গিতে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা বা শোয়ার সময় বালিশের সঙ্গে ঘাড়ের অসামঞ্জস্যের কথা বলা যায়। আর এসব কিছুরই সাধারণ বহিঃপ্রকাশ হলো রগে টান বা ব্যথা। আঘাতে শুধু মাংসপেশিই নয়, তার সঙ্গে থাকা রক্তনালি ও স্নায়ুও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
অনেক সময় রক্তনালি, মাংসপেশি ও স্নায়ুতে একই সঙ্গে আঘাত লাগে। এমন রোগীদের চিকিৎসায় সাধারণত রক্তনালি, অর্থোপেডিক ও স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজন হয়।