কাকডাকা ভোর দেখার নেশা এই যুগে কর্মজীবী মানুষের নেই বললেই চলে। তবে কাকডাকা ভোর দেখতে হচ্ছে অনেককেই। সেটাও ওই কাজের প্রয়োজনেই। ধরুন, কাল সকালে পরীক্ষা, রাত জেগে করতে হচ্ছে অ্যাসাইনমেন্ট বা পড়েছে নাইট ডিউটি। কী খাবেন তখন? রাতের খাবারের পর কী খেলে ওজনটা বেড়ে যাবে না বা শরীর খারাপ করবে না, এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন অনেকেই। কেউ কেউ তো ওজন বেড়ে যাবে ভেবে সে সময়টায় না খেয়ে ক্ষুধায় কষ্ট করেন। তাতে অ্যাসিডিটির জন্য শরীর আরও খারাপ হতে থাকে।
এ ব্যাপারে ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান ও প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, আমাদের সারা দিনের ক্যালরিটাকে ভাগাভাগি করতে হবে। ধরুন, একজন মানুষ যদি রাতে খাওয়ার পর তিন ঘণ্টা পার হওয়ার আগে ঘুমিয়ে পড়েন, তাহলে তাঁর খাবার হচ্ছে ছয়বার। ছয়বার তিনি যে খাবার খাচ্ছেন, যদি অনেক রাত পর্যন্ত জাগতে হয় তাহলে সেটাকেই আট ভাগে ভাগ করতে হবে! সারা দিনের ক্যালরি ভাগ করে খেলে কিছুতেই আর ওজন বাড়বে না। তবে তাতে কমবেও না।
ব্যাপারটা হচ্ছে, কেউ যদি রাত জাগেন তাহলে তিনি দিনে ঘুমান। দিনে ঘুমানোর এই ছয়-সাত ঘণ্টায় তাঁর সকালের নাশতা আর সকাল-দুপুরের মাঝামাঝি সময়ের খাবার বাদ পড়ছে। এ সময়ের খাবারটা তিনি রাতে খেতে পারেন।
অনেক সময় মিড মর্নিং স্ন্যাকস হিসেবে অনেকে টক-জাতীয় ফল খান। সমস্যা হচ্ছে, এই ফলটা রাতে খাওয়া যাবে না কিছুতেই। রাতের খাওয়ার তিন ঘণ্টা পর খাওয়া যেতে পারে দুধ, মিষ্টি কোনো ফল, দুটি বিস্কুট। সারা রাত জাগলে এর মধ্যে একবার ওটস বা এ-জাতীয় খাবারও খাওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে খাবার যেন এমন না হয় যা অ্যাসিডিটির কারণ হতে পারে। ভাজাপোড়া কিছু না খাওয়াই ভালো, যা ওজন বাড়াতে সহায়তা করবে। ক্রমাগত রাত জাগলেও দিনের বেলা অন্তত ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। যেন পরবর্তী সময়ে তা কোনো ধরনের বড় অসুখের কারণ না হয়ে দাঁড়ায়।
সারা দিনের ক্যালরি ভাগাভাগি করে খাওয়ার বাইরে যদি রাতে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করা যায়, তাহলে ওজন বাড়ার ভয়ের বদলে তা কমার আশঙ্কাও বেড়ে যাবে।