নানা রোগে ও সমস্যায় রক্তের প্রয়োজন হতে পারে কারও। প্রয়োজন হতে পারে শিশুদেরও। রক্তের প্রয়োজন হলে অনেক সময় দেখা যায় আত্মীয় পরিজন ছুটোছুটি করছেন। এমনকি শিশুর বাবা-মা নিজেরাও রক্ত না দিয়ে ছুটছেন বিভিন্ন রক্ত সংগ্রাহক সেন্টারে। কেউ আবার পেশাদার রক্তদাতাকেও খোঁজেন। এভাবে মূল্যবান সময়ের অপচয় হয়। রক্ত দিলে নিজে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে অতি প্রিয়জনকেও রক্ত দিতে পিছপা হন।
একজন পূর্ণবয়স্ক সুস্থ মানুষের শরীরে প্রায় ৫ থকে ৬ লিটার রক্ত থাকে। সাধারণত ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিলিটার রক্ত একবারে নেওয়া হয়। অর্থাৎ, মাত্র ৫-৬ ছটাক রক্ত। এতে শারীরিক কোনো ক্ষতি হয় না। যেকোনো দুর্ঘটনায় এর চেয়ে অনেক বেশি রক্তক্ষরণ হয়েও একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ স্বাভাবিক, সুস্থ থাকতে পারেন।
* রক্তদানের পর দেহে রক্তের জলীয় অংশ পূরণ হতে সময় লাগে মাত্র ৫ থেকে ২৪ ঘণ্টা।
* রক্তের লোহিত কণিকার সংখ্যা পূরণ হয় ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে।
* রক্তদানে সক্ষম ও যোগ্য ব্যক্তি প্রতি চার মাস অন্তর রক্ত দিতে পারেন।
* রক্ত গ্রহণের পদ্ধতি সম্পূর্ণ ব্যথাহীন
* ৩০০ মিলিলিটার রক্ত নিতে ৫ থেকে ৭ মিনিট সময় লাগে
* এরপর রক্তদাতা যদি মিনিট বিশেক বিশ্রাম নেন এবং সামান্য কিছু জলীয় খাবার (চা, শরবত ইত্যাদি) গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি পূর্ণমাত্রায় তাঁর স্বাভাবিক কাজে ফিরে যেতে পারেন। অর্থাৎ, রক্তদান কারও স্বাভাবিক কাজকর্মের কোনো ব্যাঘাত ঘটায় না, শারীরিক অসুস্থতা তো দূরের কথা।
যে কেউ নিচের শর্তগুলো পূরণ করলেই নিশ্চিন্তে রক্ত দিতে পারবেন—
* ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সের যেকোনো সুস্থ লোক, যিনি অতি সম্প্রতি কোনো উল্লেখযোগ্য কঠিন অসুস্থতায় ভোগেননি।
* ওজন কমপক্ষে ১০০ পাউন্ড হতে হবে।
* রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমপক্ষে ১২ গ্রাম বা ১০০ মিলিলিটার হতে হবে।
* শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইটের নিচে থাকতে হবে।
* রক্তচাপ ১৮০/১০০ মিলিমিটার পারদের নিচে এবং ১০০/৬০ মিলিমিটার পারদের ওপরে থাকতে হবে।
* নাড়ির গতি প্রতি মিনিটে ৬০-১০০-এর মধ্যে থাকতে হবে।
তবে সাম্প্রতিককালে সিফিলিস, জন্ডিস (বিশেষত হেপাটাইটিস-বি, সি) ম্যালেরিয়া, এইচআইভি সংক্রমণ ইত্যাদিতে আক্রান্ত ব্যক্তি রক্তদানের অযোগ্য।