সাজ যখন নষ্ট হয়



সাজ প্রায় শেষ। এখন শুধু লিপস্টিক পরে নিলেই হলো। কিন্তু হায়! শেষে এসেই ঘটল বিপদ। অসাবধানতায় লিপস্টিক ঠোঁট থেকে বেরিয়ে লাগল নাকের নিচে। এখন কী হবে? হাতেও যে সময় কম। সঙ্গে যদি থাকে মেকআপ রিমুভার, তুলা বা কটন বাড আর মেকআপ-সামগ্রী তাহলে আর চিন্তা নেই। পুরো মেকআপ তুলতে হবে না। বুদ্ধি করে মেকআপের ভুলগুলো শুধরে নেওয়া যাবে। রূপবিশেষজ্ঞ বাপন রহমান বাতলে দিচ্ছেন সেইসব বুদ্ধি।
আইলাইনার
আইলাইনার দিতে গেলে হাত কাঁপে না, এমন আছেন কজন? এটি দিতে গেলে একটু এদিক-ওদিক হবেই। চিকন লাইনার মোটা করা তেমন ঝক্কির কাজ নয়। কিন্তু যদি এক চোখের চেয়ে আরেক চোখের লাইনার মোটা হয়ে যায় তবে? ভুলেও পুরো মেকআপ তুলবেন না যেন। প্রথমে কটন বাডে আই মেকআপ রিমুভার লাগিয়ে নিন। এরপর দুই আঙুল দিয়ে আলতো করে চেপে কটন বাডের অতিরিক্ত ভেজা ভাব দূর করুন। নষ্ট হয়ে যাওয়া আইলাইনের ওপর কটন বাড ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তা তুলে ফেলুন। যদি চোখে শ্যাডো দেওয়া থাকে, তাহলে আইলাইনার তুলে ফেলার সময় সেটিও একটু উঠে আসার কথা। এমন হলে শ্যাডোটা ঠিক করে নিয়ে নতুন করে আইলাইনার পরুন। আর যদি আইলাইনারের কোনা নষ্ট হয়, তাহলে মোছার পর চিকন তুলিতে ত্বকের রঙের চেয়ে এক ধাপ গাঢ় প্যানস্টিক দিয়ে জায়গাটি ঢেকে নিন। তারপর ঠিক করে আইলাইনার পরুন।
মাশকারা
চোখ সাজানোর একদম শেষেই সাধারণত মাশকারা লাগানো হয়। মাশকারা লাগাতে গিয়ে হাত একটু ফসকে গেলেই বিপত্তি। ব্রাশের কালি গিয়ে লাগবে একদম চোখের পাতায়। হায়রে! এতক্ষণ ধরে যত্ন করে চোখে শেড পরলেন আর এখন একটু ভুলের জন্য সব কষ্ট বৃথা যাবে? মোটেই না। মাশকারাও আইলাইনারের মতো একই কায়দায় হালকা করে ঘষে তুলে ফেলতে পারবেন। এরপর আই শ্যাডো ঠিক করে নিন। চোখের পাপড়িতে আরেকবার মাশকারা বুলিয়ে নিতে চান? নিন। তবে এবার কিন্তু খুব সাবধানে। আবার অনেক সময় মাশকারা লাগানোর পর চোখের পলক ফেলার সময় তা পাতায় লেগে যায়। এমন হলে আইশ্যাডো ব্রাশ দিয়েই তা ঠিক করে নিতে পারেন।
কাজল
চোখের নিচে লেপ্টে যাওয়া কাজল বেশি ঘষাঘষি করতে গেলে পুরো মুখে সেই কালি লেগে আরও যা তা অবস্থা হতে পারে। তাই আই মেকআপ রিমুভার দিয়ে তুলে নিয়ে সেখানে সামান্য পাউডার বা প্যানস্টিক লাগিয়ে নিতে পারেন।
লিপস্টিক
লিপস্টিক ঠোঁটের বাইরে চলে গেলে কটন বাডে মেকআপ রিমুভার বা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে বের হয়ে যাওয়া অংশ তুলে ফেলুন। ভেতর থেকে বাইরে নয়, মুছতে হবে বাইরে থেকে ভেতরের দিকে হালকা ঘষে। কিছু লিপস্টিকের রং সহজে উঠতে চায় না। এ ধরনের লিপস্টিকের কারণে সাজ নষ্ট হলে মহা জ্বালা। তখন কাজটি করতে হবে একটু ধৈর্য ধরে। বের হয়ে যাওয়া অংশটুকু মুছে ফেলার পর কনসিলার পেনসিল দিয়ে সেই জায়গার মেকআপ ঠিক করে নিতে পারেন।
ব্লাশন
ব্লাশন দেওয়ার পর মনে হলো, ইশ্‌! ব্লাশনের রংটা বেশি চড়া হয়ে গেছে। একটু হালকা করতে হবে। এমন হলে তাড়াতাড়ি ওঠানোর জন্য পানি বা ক্রিম দিয়ে ব্লাশন তুলতে যাবেন না কিন্তু। এতে পুরো সাজ ঠিকঠাক করতে অনেকটা সময় লেগে যাবে। তার চেয়ে বরং হাতে নিন একটি শুকনো কটন বল। ঘষে ঘষে ব্লাশন হালকা করে ফেলুন। রং হালকা হয়ে এলে এর ওপর ত্বকের রঙের সঙ্গে মেলানো ফেস পাউডার বুলিয়ে নিন। মেকআপ করার সময় ব্যবহৃত পরিষ্কার স্পঞ্জ দিয়েও ব্লাশন হালকা করা যেতে পারে।
বাজারে এখন মেকআপ ইরেজার কিনতে পাওয়া যায়। এটি থাকলে মেকআপের ভুলগুলো সহজে ঠিক করা যাবে। আর যদি সাজ বেশিক্ষণ ধরে ঠিক রাখতে চান, তাহলে সাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাওয়ার পর ‘সেটিংস স্প্রে’ ব্যবহার করে নিন। তাহলে আর সাজ নষ্টের ভয় থাকবে না।
কাজলটা যে লেপ্টে গেল, এখন কী করি? মডেল: তুরজি, ছবি: সুমন ইউসুফ
أحدث أقدم