প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম মুফতি সাহেব .কেমন আছেন?আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন।
নাম- মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন।
বর্তমান দেশ- ফ্রানস
আপনার কাছে আমার প্রশ্নো হলো কিভাবে প্রস্রাব থেকে পবিত্র হতে হবে।
হাদিসে আছে প্রস্রাব থেকে পবিত্র না হলে কবরে আযাব হবে নামাজ সহ অন্যান্য আমল হবে না।কারণ বেশীর ভাগ লোকের আযাব হবে প্রস্রাব থেকে পবিত্র না হওয়ার কারনে। আমি এই ভয়ে সব সময় চেষ্টা করি পবিত্র হওয়ার জন্য। কিন্তু আমি অনেক সময় নেই শুধু পবিত্র হওয়ার জন্য।
১ মত অনেক গুলা টিস্যু ব্যাবহার করি তখন একটু হাটা হাটিও করি। তারপর পানি ব্যাবহার করি। কিন্তু আমি অনেক পানি ব্যাবহার করি যা অপচয়। অনেক সময়্ও অপচয় করি। টিস্যু ব্যাবহার করে এত পানি ব্যাবহারের পরে ও আমার সন্দেহ থাকে প্রস্রাব মনে হয় পরিষ্কার হয় নাই। আমি প্রায় ১০-১৫ মিনিট লাগে প্রস্রাব থেকে পবিত্র হতে অনেক সময়।
আমি এই টিস্যু,পানি, ও সময় ব্যাবহার করি শুধু আল্লাহর ভয়ে কিন্তু অনেক অপচয় করি। এখন আমি কিভাবে এই সমস্যা থেকে পরিত্রান হতে পারি এবং রসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি সল্লাম) কিভাবে পরিত্রান হতেন এবং কিভাবে পবিত্র হতে বলেছেন। সাহাবেয়ে কেরাম কিভাবে
পবিত্র হয়েছে।
পরিষ্কার করে বললে পুরুষ এবং মহিলার জন্য আমাদের অনেক উপকার হবে কুর্আন,হাদিস,সুন্নাহ ও ইজমায়ের আলোকে।
যাতে আমরা রসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি সল্লাম) এর মত পবিত্র হতে পারি যেইভাবে তিনি বলেছেন।
১)
এখন আমাকে বুদ্দ্বি দেন কিভাবে এই সকল অপচয় বন্ধ করে শুধ্ব ভাবে এস্তেঞ্জা থেকে পবিত্র হতে পারব?
২)
শুধু টিস্যু ব্যাবহার করলে পানি না ব্যাবহার করলে পবিত্র হওয়া যাবে
কি? নামাজ সহ অনান্য আমল এর জন্য যোগ্য হব কি?বা করা যাবে কি?
৩)
এবং মহিলারা কিভাবে পবিত্র হবে? উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম।
আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করুক।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
পেশাব থেকে পবিত্র হওয়া জরুরী। তেমনি ওয়াসওয়াসার রোগ থেকে মুক্ত থাকাও জরুরী।পবিত্রতার ক্ষেত্রে মূল বিষয় হল, নাপাকী দূর করা। নাপাকী দূরিকরণটা টিস্যুর মাধ্যমেও হতে পারে, আবার পানির মাধ্যমেও হতে পারে। তবে সর্বোত্তম হল পানির মাধ্যমে পবিত্র হওয়া।
তবে টিস্যু ও পানি উভয়টিও ব্যবহার করা যায়।
যেহেতু আপনার সন্দেহের বাতিক রয়েছে। তাই প্রথমে টিস্যু ব্যবহার করে, কিছুক্ষণ পরই পানি দিয়ে লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেলুন। একবার ভাল করে ধুলেই হবে। আর কোন সন্দেহ রাখার প্রয়োজন নেই। যদি মনে হয় যে, পবিত্র হোননি, তাহলে মনে করবেন, এটি শয়তানের পক্ষ থেকে ওয়াসওয়াসা।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইস্তিঞ্জা যে পদ্ধতিতে করেছেন, সেটিই আমাদের কাছে পবিত্রতার সর্বোত্তম মানদণ্ড। এর চেয়ে বেশি পবিত্র হবার চেষ্টা করার নাম আসলে পবিত্রতা নয়, বরং বাড়াবাড়ি।
তাই টিস্যু ব্যবহারের পর, পানি দিয়ে লজ্জাস্থান একবার ভাল করে ধৌত করার পর, যতই মনে হোক যে, পেশাব থেকে পবিত্র হোননি, সেদিকে কোন খেয়াল করা যাবে না। পবিত্রতার ক্ষেত্রে পুরুষ ও মহিলার পদ্ধতি একই। শুধু পেশাবের ক্ষেত্রে মহিলারা ঢিলা ব্যবহার করতে পারেন না। কিন্তু টিস্যু ব্যবহার করতে পারেন।
عَطَاءُ بْنُ أَبِي مَيْمُونَةَ قَالَ: سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «إِذَا خَرَجَ لِحَاجَتِهِ، أَجِيءُ أَنَا وَغُلاَمٌ، مَعَنَا إِدَاوَةٌ مِنْ مَاءٍ، يَعْنِي يَسْتَنْجِي بِهِ»
আতা বিন আবী মাইমুনা বলেন, আমি শুনেছি আনাস বিন মালিক রাঃ বলেছেন, রাসূল
সাঃ যখন প্রয়োজন সম্পন্ন [টয়লেটে যাবার জন্য] করার জন্য বের হতেন, তখন আমি
ও আরেক ছেলে আসতাম। আমাদের সাথে পানির পাত্র থাকতো। অর্থাৎ এ দিয়ে রাসূল
সাঃ ইস্তিঞ্জা করতেন। {বুখারী, হাদীস নং-১৫০}
عَنْ عِيسَى بْنِ يَزْدَادَ الْيَمَانِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا بَالَ أَحَدُكُمْ فَلْيَنْتُرْ ذَكَرَهُ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ
হযরত ঈসাব বিন ইয়াযদাদ আলইয়ামানী তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। রাসূল সাঃ
ইরশাদ করেছেন, যখন তোমাদের কেউ পেশাব করে, তখন সে যেন তার লজ্জাস্থানকে
তিনবার ঝেড়ে নেয়। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩২৬}
وَمَنْ اسْتَجْمَرَ فَلْيُوتِرْ، مَنْ فَعَلَ فَقَدْ أَحْسَنَ، وَمَنْ لَا فَلَا حَرَجَ،
যে ব্যক্তি ঢিলা ব্যবহার করে সে যেন বেজোড় ব্যবহার করে। যে তা করবে সে
উত্তম কাজ করল, আর যে করেনি তাতে কোন সমস্যা নেই। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস
নং-৩৫}
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী