প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তন ও বিবর্তন হচ্ছে। অন্যান্য শিল্পের তুলনায় প্রযুক্তিশিল্পের ক্ষেত্রে তাই কোনো পণ্যের হারিয়ে যাওয়ার হার দ্রুত। এ মুহূর্তে আমাদের কাছে যেসব প্রযুক্তি অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে হচ্ছে, তা আগামী ১০ বছরের মধ্যেই হারিয়ে যেতে পারে। গত এক দশকের চিত্রই দেখুন না! হারিয়ে যেতে বসেছে ফটোকপিয়ার, ওয়াকম্যান, অ্যানালগ ক্যামেরার মতো জিনিস। অথচ কয়েক বছর আগেও এগুলো কতই-না আধুনিক ছিল! আগামী ১০ বছরে হারিয়ে যেতে পারে—এমন প্রযুক্তিগুলো নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গ্যাজেটস নাউ।
স্মার্টফোন
শুনতে আশ্চর্য মনে হলেও আগামী ১০ বছরের মধ্যেই স্মার্টফোন হারিয়ে যেতে পারে। এখন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে হলেও স্মার্টফোনের বদলে কাচের কোনো স্ক্রিনে করে সবখানে তথ্য নিতে পারব বা কোনো দেয়াল ডিসপ্লেতে দেখতে পাব। কল করার জন্য থাকবে তারবিহীন এয়ারবাড। স্মার্টফোনের মতো যন্ত্রের আর কি দরকার!
প্লাস্টিক কার্ড
আর্থিক লেনদেনে প্লাস্টিক কার্ডের ব্যবহার বিলুপ্ত হয়ে যাবে। অনলাইনে ভার্চ্যুয়াল সহকারীকে ফরমাশ দিলেই সেসব কাজ করে ফেলবে। কার্ডের দরকার ফুরাবে।
দেয়ালে ঝোলানো টিভি
দেয়ালে ঝোলানো এলসিডি, এলইডি টিভিগুলোও হয়তো ১০ বছর পরে আর দেখা যাবে না। এর বদলে পাতলা আয়নার মতো ডিসপ্লে টিভির জায়গা নিয়ে নেবে। ইতিমধ্যে এ ধরনের প্রযুক্তি কিছু তৈরি হলেও মূলধারায় আসেনি।
রিমোট কন্ট্রোল
এক দশক পরে আর রিমোট কন্ট্রোল থাকবে না। মানুষ জেশ্চার বা অঙ্গভঙ্গি করে বা কণ্ঠস্বর দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করবে বিভিন্ন যন্ত্র। ইতিমধ্যে বিভিন্ন বাতি, এয়ার কন্ডিশনারে যুক্ত সেন্সর এ ধরনের কাজ করছে।
কর্ডহীন ল্যান্ডলাইন
কর্ডলেস ল্যান্ডফোনের জায়গা করে নেবে ঘরের মধ্যে বসানো ক্ষুদ্র মাইক্রোফোন। যেখানে যান বাড়ির সবখানেই এটি লাগানো যাবে। ভার্চ্যুয়াল সহকারী সফটওয়্যারের সহযোগিতায় ঘরের সব জায়গা থেকেই কথা বলা যাবে।
ল্যাপটপ
আগামী ১০ বছরের মধ্যেই ল্যাপটপের যুগও শেষ হয়ে যেতে পারে। কোনো ট্যাবলেট বা দেয়ালের ওপর প্রজেকশন করে ফেলা ভার্চ্যুয়াল কি-বোর্ডে কাজ চলবে। টেবিলকে স্ক্রিন হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার বদলে বাড়ি বসে টেলি কমিউটিং বাড়বে। ওয়্যারলেস ওয়েবক্যাম দিয়ে হবে মুখোমুখি আলাপ।
ডেস্কটপ
ল্যাপটপের ভাগ্য ঘটতে পারে ডেস্কটপের ক্ষেত্রেও। যেকোনো ডিসপ্লেতে যদি বিশ্বের যেকোনো জায়গায় কাজ করা যায় কে এত বড় ডেস্কটপ বাড়িতে আর রাখবে?
ক্ল্যাসিক অ্যানালগ ঘড়ি
ধীরে ধীরে অ্যানালগ ঘড়ির দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো একাধিক কাজের উপযোগী ডিজিটাল স্মার্টঘড়ি তৈরি করায় আগামী এক দশকে আর হয়তো অ্যানালগ ঘড়ির ব্যবহার হবে না।
এক্সটার্নাল হার্ডড্রাইভ
ক্লাউড প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ায় আগামী এক দশকে এক্সটার্নাল হার্ডড্রাইভের প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যেতে পারে। এখনই অনেক তথ্য ক্লাউডে রাখা হচ্ছে। পরবর্তী দশকে আরও বাড়বে এর ব্যবহার। গুগল ফটোজ, ওয়ানড্রাইভ, ড্রপবক্সসহ অন্যান্য সেবা বাড়বে।
স্পিকার
আগামী এক দশকে স্পিকার বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। এর জায়গা নেবে আরও দক্ষ ও ছোট আকারের কোনো প্রযুক্তি। এটি সমতল কোনো পৃষ্ঠে এমনভাবে থাকবে, যা তারহীনভাবে ব্লুটুথের মাধ্যমে অডিও স্ট্রিমিং করবে। ভার্চ্যুয়াল সহকারীকে গান শোনাতে বললে তা পছন্দের গান শোনাতে শুরু করবে।