অপরিচিত একটা নং থেকে ফোন আসল, রিসিভ
করতেই একটা মেয়ে দুলাভাই ডাকল!!
বিয়ে না করেই শালি জুটে গেল!!
—জি শালিকা, বলুন। কথাটা বলতেই
বাবার ফোন আসল। সরি, রং নাম্বার বলেই
ফোনটা কেটে দিলাম। এক সপ্তাহ পর………
—হ্যালো?
—কেমন আছেন?
—জি, ভাল। কে বলছেন?
—আপনার শালিকা হি হি হি
—আমিতো বিয়ে করিনি,
কিভাবে আপনি আমার শালিকা হলেন!?
—বারে, সেদিন আমি না হয় মিসটেক
করেছি। আপুর হবু বরকে ফোন
দিতে গিয়েইতো মিসটেকটা করলাম। কিন্তু
আপনিতো আমাকে শালিকা ডাকলেন। তাই
ভাবলাম দুলাভাইয়ের একটু খোঁজ নিই!!
আচ্ছা এবার বলুন, আপনার নাম কি?
আপনি কি করেন?
—আমি সোহান। পার্টটাইম জব করি,
পার্টটাইম পড়ালেখা, পার্টটাইম
ফেসবুকিং!
—বাহ! সবকিছু পার্টটাইম। পার্টটাইম
পড়ালেখাটা কেমন?
—ইভনিং এমবিএ করছি।
—পার্টটাইম প্রেম টেম করেন না!! হি হি
—হা হা…না, এসব নিয়ে ভাবিনা।
—হুম, ভাল।
—ভাল কেন!!?
—না মানে প্রেম করা ভাল না করাও ভাল।
—ও…..আচ্ছা আপনার নাম কি? কি করেন?
কিছুইতো বলেননি?
—আমি বিথি। ইন্টারমিডিয়েট পাশ
করেছি এবার।
—আচ্ছা জানাশোনাতো হল, এবার
আমি রাখছি।
—কেন? আপনি কি বিজি?
—বিজি না। আর কি বলার আছে। আপনি ভাল
করে পড়াশুনা করুন। ভার্সিটিতে চান্স
পেতে হবেনা?
—আজব মানুষতো আপনি!!
ফোনে রং নাম্বারে কতজন আমার
সাথে কথা বলতে চায়। তাদেরতো ঝাড়ির
উপর রাখি। আর আপনি কিনা আমার মত
একটা সুন্দরী মেয়ের সাথে ফ্রেন্ডশিপ
করতে চাননা! অবশ্য
আপনি আমাকে দেখেননি। তিথি আপু
দেখতে অনেক সুন্দরী। কিন্তু সবাই
বলে আমি নাকি আপুর চেয়েও সুন্দরী। ও,
আপনাকেতো বলাই হয়নি। আমরা দু’বোন।
তিথি এবং বিথি। বাবা মিলিয়ে নাম
রেখেছেন। আপু নেই আর হাতে অনেক সময়।
তাই ভাবছি আপনার সাথে ফ্রেন্ডশিপ
করব!! আর শুনুন, পড়ালেখা করতে আমার
একদম ভাললাগেনা!!
তবে ছাত্রী হিসেবে আমি খারাপ না। এ
প্লাস, বুঝছেন!!?
—তাহলে বিয়ে করে ফেলুন। বড় বোনের
বিয়েতো হলই। পথ পরিষ্কার!!
—হি হি হি…..আপুর বিয়ের প্রথম থেকেই
আমার মনেও বিয়ের ভাবনা কাজ করছে।
সেজে-গুজে বসে থাকব। বর এসে আমায়
নিয়ে যাবে। একটা ছেলে আর একটা মেয়ে।
সুখি সংসার, ব্যস!!
—এত দূর!!! আমার মাথা ঘুরতেছে।
আমি এখন রাখছি।
কি পাগল একটা মেয়ের পাল্লায়
পড়লামরে বাবা!! মনে হয় একটা ঝড়
বয়ে গেল, ঝড়ের বেগে কথা বলে।
চপলা মেয়ে। একটু সহজ-সরল ও মনে হয়।
পরদিন থেকে বিথি প্রতিদিন সকাল,
বিকেল এবং রাতে ফোন দেওয়া শুরু করে।
আমিও ওর ফোনের অপেক্ষায় থাকি। ফোন
আসতে দেরী হলে কেমন যেন অস্থির লাগে।
একটা মায়া, মোহ কাজ করছে। ওর
চঞ্চলতা আমার বেশ ভালই লাগে।
—হ্যালো, কেমন আছেন?
—এইতো ভাল, আপনি কেমন?
—শুনুন, আপনি আমাকে তুমি করে বলবেন,
ঠিক আছে।
—হা হা… বল, ভাল আছোতো?
—হুম, ভাল। আপনার ফেসবুকটা দিনতো।
—সোহান সালেমী, ফেবুতে এই নামে আর
কেউ নেই। বাংলায় লিখে সার্চ দাও,
পেয়ে যাবে।
—ওকে, রাতে কথা হবে। এখন রাখছি, বাই।
রাতে আমিই ফোন করলাম।
—কি করছ বিথি?
—কিছুনা। আপনাকে ফ্রেন্ডরিকু দিয়েছি।
আপনিতো বেশ স্মার্ট।
আমি জানি সুন্দরী বিথি’র
ছবি দেখতে না পেয়ে আপনি বেশ হতাশ
হয়েছেন!! হি হি হি। টেনশন নিবেন না।
ইনবক্সে আপনাকে দেব। আপনার
প্রতি সে বিশ্বাস আছে।
—আরে নাহ। তুমি যে কি বল!!
মেয়েটাতো বেশ চালাক! যদিও
সত্যটা লুকিয়েছি। ইনবক্সে ওর ছবিটার
দিকে যে কতক্ষণ তাকিয়ে থেকেছি।
বিথি সত্যিই অনন্য সুন্দরী। প্রায় তিনমাস
হল। ফোনে, ফেসবুকে বিথি’র সাথে ভালই
সময় কাটছে। ওর সীমাহীন চঞ্চলতায়
আমি মুগ্ধ। তবুও সদা সজাগ থেকেছি।
প্রেমে পড়ে গেলে উঠব কি করে? প্রেম-
ভালবাসার প্রতি আমার কোন বিশ্বাস নেই!
শুধু শুধু কেন কষ্ট পাওয়া।
—বিথি, কেমন আছ? গতকয়েকদিন কই
ছিলে?
—ভাল আছি। আপনি ভালতো?
—ভাল। তোমার কণ্ঠ আজ এমন শীতল কেন?
কোন সমস্যা?
—আপনার সাথে কিছু কথা ছিল।
—হুম, কি কথা বল।
—আমার কিছুই ভাল লাগছেনা। আমি ঠিকমত
ঘুমাতে পারছিনা, খেতে পারছিনা। আমার
খুব অস্থির লাগছে।
(আমার বুঝতে বাকি রইল না, তবুও….)
—কেন হঠাৎ এমন হল?
—আপনি বুঝতে পারছেন না? আই এম ইন
লাভ উইথ ইউ………..চুপ করে আছেন কেন?
—বিথি, বড্ড দেরী হয়ে গেছে। পরশু আমার
এনগেজমেন্ট হল। একসপ্তাহ আগে বললেও
আমি তোমাকে ফেরাতামনা…….
বিথি ডুকরে কাঁদতে লাগল। কিছুক্ষণ পর
ফোন কেটে দিল। যে সদাচঞ্চল,
হাসিখুশি থাকত; আজ মুহূর্তেই সব উবে গেল।
মনটা বিষাদে ভরে গেল। কিছুটা সসময়
ভাবলেশহীনভাবে কাটল। একজনের স্বপ্ন ভেঙে অন্যজনের
স্বপ্নসারথী হওয়া কি সম্ভব!? বিথি,
আমিতো চাইনি তোমায় কষ্ট দিতে…….