ঐতিহ্যের টানে

ঐতিহ্যের টানে

oitijjer taneপানাম নগর উষ্ণ ফাগুনবেলায় কোথাও বেড়ানোর কথা ভেবে থাকলে ঘুরে দেখতে পারেন দেশের কিছু ইতিহাস-ঐতিহ্য সমৃদ্ধ দর্শনীয় স্থান।
মহাস্থানগর
মহাস্থান নগরের অবস্থান বগুড়া জেলায়। বগুড়া শহর থেকে দূরত্ব মাত্র ১০ কিলোমিটার। আর ঢাকা শহর থেকে বগুড়ার দূরত্ব পাঁচ ঘণ্টার। পুরাকীর্তির সম্ভারে পূর্ণ মহাস্থানগড়। সঙ্গে বাড়তি পাওনা ঐতিহ্যবাহী বগুড়ার দই!
কী দেখবেন
বগুড়া গিয়ে প্রথমেই যাই সাতমাথায়। সাতটি রাস্তা এসে মিলেছে এখানে।
মাইক্রোচালক রেজা আমাদের প্রথমে কালিদহ সাগরে নিয়ে যায়। সেখান থেকে বেহুলার বাসর। তারপর যাই হজরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী মাহিসাওয়ার (রা.)-এর মাজার শরিফে। কথিত আছে, একবার এক ব্যক্তিকে রাজা পরশুরাম মৃত্যুদণ্ড দিলে তাকে বাঁচানোর জন্য মাছের পিঠে চড়ে আসেন হজরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (রা.)।সে জন্যই তাঁকে বলা হয় মাহি সাওয়ার। মাজার শরিফ থেকেবের হয়ে শীলাদেবীর ঘাট ঘুরে চলে আসি মহাস্থানগড়। এরপর গোবিন্দ ভিটা, সেখান থেকে মহাস্থান গড় জাদুঘরে। মহাস্থানগড় খনন করে গুপ্ত, মৌর্য, সেন ও পাল বংশীয় যুগের যেসব প্রস্তর খণ্ড ও দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া গেছে তার সবই এই জাদুঘরে রক্ষিত রয়েছে। জাদুঘর ঘুরে দেখে আমরা চলে আসি জিয়ৎকুণ্ড। সেখান থেকে পরশুরামের ভিটায় যাই। নামমাত্র ভিটা, কিছু উঁচু টিলা প্রমাণস্বরূপ দাঁড়িয়ে। আমরা পরশুরামের ভিটা হয়ে আকবরীয়া হোটেলে চলে আসি। ভাতের সঙ্গে ট্যাংরা মাছের চচ্চরি মুখে দিতেই বুঝতে পারি, খিদা লেগেছিল খুব!
কীভাবে যাবেন
ঢাকার কল্যাণপুর থেকে যেকোনো বাসে চড়ে বসুন। পাঁচ ঘণ্টায় চলে যাবেন বগুড়া। শহরের যানজটের বিরক্তিটা দূর হয়ে যাবে আকবরীয়া হোটেলের মজাদার খাবারে। শ্যামলী হোটেলের খাবারও মন্দ না। আকবরীয়া হেটেলে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা আছে। পর্যটন হোটেলে থাকতে পারেন। থাকতে পারেন নাজ গার্ডেন সেফওয়ে বা নর্থওয়ে মোটেলে। আগে থেকে বুকিং দিয়ে যাবেন। এখানে দৈ-ঘরের দৈ খুব ভালো।
কান্তজীর মন্দির
দিনাজপুর জেলার কাহারোল থানা। ঢেপা নদীর তীর। পাশেই কান্তজীর মন্দির। কান্তজীর মন্দিরের পোড়ামাটির ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিভিন্ন দেবদেবীর ভাস্কর্য, চণ্ডীদেবী বা কালির যুদ্ধযাত্রা। তা ছাড়া গাছ-লতা-পাতা-ফুলও রয়েছে। আরও আছে যোদ্ধা, বিভিন্ন নারী-পুরুষ, গায়ক-বাদক ও শিকারির ভাস্কর্য।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে হানিফ শ্যামলী, নাবিল, কেয়া পরিবহনের বিভিন্ন বাস সকাল-সন্ধ্যা দিনাজপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে। ট্রেনে সময় লাগবে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা। সকালে একতা এক্সপ্রেস আর রাতে দ্রুতযান এক্সপ্রেস কমলাপুর থেকে দিনাজপুর ছেঁড়ে যায় প্রতিদিন।
কোথায় থাকবেন
দিনাজপুর শহরের উত্তরে কান্তনগরে অবস্থিত কান্তজীর মন্দির। দিনাজপুর শহর থেকে কান্তজীর মন্দিরের দূরত্ব ১০ থেকে ১২ মাইল। শহরে রাত্রিযাপনের জন্য ভালো হোটেল আছে। যেমন হোটেল দিনার, হোটেল আল-রশিদ। তা ছাড়া হাউজিং মোড়ে অবস্থিত পর্যটন মোটেলে থাকতে পারেন। আগে থেকেই বুকিং দিয়ে যেতে হবে।
সোনারগাঁ
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ একটি আকর্ষণীয় ঐতিহাসিক স্থান। এখানে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন প্রতিষ্ঠা করেছেন লোকশিল্প জাদুঘর। এখানে অবস্থিত ঈশা খাঁর রাজধানী লুপ্তপ্রায় নগরের মধ্যে টিকে থাকা পানাম নগর।
কীভাবে যাবেন
ঢাকার গুলিস্তান ও যাত্রাবাড়ী থেকে সকাল-সন্ধ্যা সোনারগাঁয়ের উদ্দেশে বাস ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রাকাল এক ঘণ্টার হলেও যাত্রাবাড়ীর জ্যাম একটু ধকলই মনে হবে। সকালে গিয়ে বিকেলেই ফিরে আসা যায়।
নবীনতর পূর্বতন