রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন গল্পে ভৃত্য রাইচরণের সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে বাড়ির মনিবের ছেলের সলিলসমাধি হয়। ছেলেটিকে রাইচরণ প্রাণাধিক ভালোবাসত। ঘটনাটি রাইচরণের অগোচরে ঘটলেও এর জন্য তাকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এ ঘটনার জন্য রাইচরণ ভীষণ অনুতপ্ত হয়।
আপনি যতই চেষ্টা করুন না কেন, যে লোক যতটুকু ভার বইবার ক্ষমতা রাখে, তার চেয়ে বেশি ওজনের বোঝা সে লোককে দিয়ে স্থানান্তর করাতে পারবেন না। আর যদি সে দুরূহ চেষ্টা করেও তবে অনিষ্ট ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ যার ক্ষমতা যতটুকু, তার চেয়ে বেশি কাজ আদায় করতে গেলে কাজের কাজ কিছুই তো হবে না; বরং ব্যক্তির ক্ষমতা বিলোপ হবার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। যেমন, যে বালকের খেলাচ্ছলে শিক্ষা গ্রহণ করবার বয়স, সে ছেলেকে যদি তার ওজনের চেয়ে বেশি বই দিয়ে বিদ্যালয়ে গমনের ব্যবস্থা করা হয়, তবে শিক্ষার প্রতি বালকের একটা বিদ্বেষভাব কাজ করবে। সুতরাং বালকের যতটুকু বিদ্যার্জনের ভার বইবার ক্ষমতা রয়েছে তার চেয়ে বেশি চাপ দেয়া কখনই ঠিক হবে না।
এই নিষ্ঠুর অভিযোগে গফুরের যেন বাকরোধ হইয়া গেল। ক্ষণেক পরে ধীরে ধীরে কহিল, কাহনখানেক খড় এবার ভাগে পেয়েছিলাম, কিন্তু গেল সনের বকেয়া বলে কর্তামশায় সব ধরে রাখলেন। কেঁদে কেটে হাতে-পায়ে পড়ে বললাম, বাবুমশাই, হাকিম তুমি, তোমার রাজতি্ব ছেড়ে আর পালাবো কোথায়? আমাকে পণদশেক বিচুলিই না হয় দাও।
(১) মনে হয় একদিন আকাশের শুকতারা দেখিব না আর দেখিব না হেলেঞ্চার ঝোপ থেকে এক ঝাড় জোনাকি কখন নিভে যায়; দেখিব না আর আমি পরিচিত এই বাঁশবন।
স্বাধীন দেশে চন্দনের ফেরা হলো না আর_ ওর বুড়ো মা-বাবার অপেক্ষার প্রহরের শেষ নেই।
মা-বাবার একমাত্র মেয়ে রূপা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। চাকরিজীবী মা-বাবা অফিসে চলে গেলে রূপাকে সারা দিন ঘরে বন্দি থাকতে হয়। সে অন্য বালক- বালিকাদের মতো মাঠে দৌড়োদৌড়ি, খেলাধ ধুলা করতে চাইলেও পারে না। সুন্দর পৃথিবীর, ঝিঁঝি ডাকা সন্ধ্যা, জোৎস্নাপ্লাবিত রাত, গাঁয়ের মেঠো পথ, সবকিছু তাকে ব্যথিত করে তোলে। এভাবেই রূপার জীবন কাটে ঘরের কোণে।
জমির সাহেব স্ত্রীকে নিয়ে রেল স্টেশনে বসে আছেন। ট্রেন আসতে অনেক দেরি। অদূরে ১৪-১৫ বছরের একটি মেয়েকে একাকী দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাদের মনে একটু সন্দেহের উদ্রেক হলো। জমির সাহেব মেয়েটির কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন এত রাতে কোথায় যাবে? মেয়েটি কোনো দ্বিধা না করেই বলল, আমার বাবা টাকার লোভে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক ব্যক্তির সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছে।
দীনুর বয়স দশ বছর। পৃথিবীতে তার আপন কেউ নেই বলে গ্রামের সবাই তাকে ভালোবাসে এবং আদর করে। একদিন খোকনদের বাড়িতে গিয়ে দেখে খোকনরা সবাই মিলিটারির ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে। দীনু অবাক হয়ে যায়, যাকে যেখানে পায় মিলিটারিরা শেয়াল কুকুরের মতো হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ কী, দীনু তা বোঝে না, তবে এটা বুঝেছিল ওই মিলিটারিরা বিদেশি। বাংলাদেশের মানুষ নয়। এদের বিরুদ্ধে লড়াই করা জরুরি। তাই সে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
কলিমদ্দি দফাদার কী ভেবে নিচের দিকে এক নজর তাকায়_ খালের তীব্র স্রোত ছাড়া আর কোনো ঝামেলা নেই সেখানে। পরমুহূর্তে আর্তনাদের মতো কণ্ঠস্বরে ‘মুক্তি মুক্তি’ বলতে বলতে পচা তক্তাসমেত নিচে পড়ে যায়। খালের জলে একটা ঝুপ করে শব্দ হয়। সঙ্গে সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে গুলিবর্ষণ শুরু হয়।
Tags:
Education Guideline