একজন রাগ করে থাকলে, অপরজনকে রাগ ভুলে গিয়ে অন্যজনকে মানানোর চেস্টা করতে হবে।
নাহলে সে সম্পর্কে তিক্ততা আসবেই।
যাকে ভালোবাসি তার সামনে মাথা নিচু করতে যদি ইগো হার্ট হয় তাহোলে সম্ভব না।
- আচ্ছা ঠিক আছে, তুমিও আমার সব কিছু নিয়ে এসো।
- হুম, তোমার ফোনে যে গতকাল ২০ টাকা রিচার্জ করে দিয়েছিলাম, আসতে একটা ২০ টাকার কার্ডও নিয়ে আসবা মনে করে।
- আচ্ছা ঠিক আছে, রাখি... বাই!!
।
কিছুটা রাগ ও বিষন্ন মনে ফোনের লাইনটা কেটে দেয় মোহিত। মেয়েটা এমন কেন !?
সামান্য ব্যাপারেই রাগারাগি করে কিন্তু আজ সে ব্রেকাপ চাচ্ছে !!
বেশী বাড়াবাড়ি অসহ্য লাগে মোহিতের।
।
নিজ থেকে সরি টরি বোলে, হাতে পায়ে ধরে গার্লফ্রেন্ড কে ঠান্ডা করার মত ছেলে না মোহিত।
সুস্মিতা যদি ব্রেকাপ করতে পারে সে কেন পারবে না!?
মোহিত কাঁপা কাঁপা হাতে সুস্মিতার দেয়া সব গিফট এবং ফটো গুলো একটা ব্যাগে গোছাচ্ছে।
আজ বিকেলেই এগুলো নিয়ে দেখা করতে হবে।
আজই শেষ দেখা। আজই ব্রেকাপ।
।
ধানমন্ডি লেকের সেই জায়গাটিতেই বসে আছে সুস্মিতা, যেখানে তাদের প্রথম দেখা হয়েছিলো।
ফেরত আনা জিনিস গুলোর ব্যাগ হাতে সুস্মিতার পাশে এসে দাঁড়ালো মোহিত।
সুস্মিতা অন্য দিকে তাকিয়ে বললো,
- সব কিছু ঠিক ঠাক এনেছো তো ?
- হুম এনেছি।
- ভেরী গুড। এই যে আমার ব্যাগটা ধরো, এখানে তোমার দেয়া সব কিছু আছে।
সুস্মিতা উঠে দাঁড়িয়ে তার ব্যাগটা মোহিতের হাতে দেয়, মোহিতও তার হাতে থাকা ব্যাগটা এগিয়ে দেয় সুস্মিতার
দিকে।
“ভালো থেকো, আর নিজের প্রতি খেয়াল রেখো” —বলেই মোহিতের সামনে থেকে হনহন করে চলে যায় সুস্মিতা।
মোহিত কিছু বলতে পারে না। স্তব্ধ হয়ে সেই জায়গাটিতেই নির্বাক হয়ে বসে পড়ে।
সুস্মিতা সত্যি সত্যিই তাকে ছেড়ে চলে গেল...!
।
এক ধরনের শূন্যতা এসে ভর করতে শুরু করলো মোহিতের বুকের ভিতর।
মহা মূল্যবান একটা জিনিস হারিয়ে ফেলতে যাচ্ছে সে।
পৃথিবীটা কেমনযেন একদম ছোট হয়ে আসছে তার।
মোহিত চুপটি করে সেখানে বসেই রইলো। কতক্ষণ মনে নেই।
।
খানিক বাদেই হঠাৎ বিদ্যুৎ গতিতে একজন পেছন থেকে এসে মোহিতের শার্টের কলার চেপে ধরলো।
সেই কেউ একজন আর কেউ নয় ‘সুস্মিতা’।
মেয়েটার চোখমুখ একদম লাল হয়ে আছে, বাচ্চাদের মত ফোঁপাচ্ছে।
মোহিতকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই সুস্মিতা একটানা বলতে শুরু করলো -
“তুমি আমাকে একটাবারও ফেরালে না কেন? ব্রেকাপ টা যেন না করি সে চেষ্টা করলে না কেন? একটিবার ‘সরি’ বলে আমার রাগ ভাঙালে না কেন? আমি কেন তোমার সাথে সব সময় ব্রেকাপ করতে চাই, ঝগড়া করি, রাগারাগি করি, তুমি বোঝো না?
একটু আমার রাগ ভাঙিয়ে আদর করে দিতে পারো না?
সব কিছু কি বলে বলেই বোঝাতে হবে? নিজে থেকে কিছু বুঝতে পারো না?
।
মোহিত ঠিক এই মুহুর্তে কি বলবে বুঝতে পারছে না।
সে শুধু কেঁদে কেঁদে ফোঁপাতে থাকা রাগিরাগি করা মেয়েটিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে আর ভাবছে, এই মেয়েটিকে ছাড়া সত্যিই তার দিন চলবে না।
তার বুকের ভিতরটা কেমনযেন শান্তি ও ভালোলাগাতে পরিপূর্ণ হয়ে গ্যাছে, সে যেন তার মহামূল্যবান কিছু একটা
ফেরত পেয়েছে, তার হঠাৎ করে ছোট হয়ে আসা পৃথিবীটা ধীরে ধীরে বিশাল আকার ধারন করছে...।