যা শালা ঘুমিয়ে পরছিলাম কখন

Related image
কি ব্যাপার বসে আছেন কেন?দেখছেন না আমি রুমে ঢুকছি?
কি করব?
কি করবেন মানে! বাড়িতে কিছু শিখাইনাই না কি? তা না হয় বাদ দিলাম বাংলা ছবিও দেখেন না? বাসর ঘরে স্বামি ঢুকবে আর স্ত্রি এসে পা ছুয়ে সালাম করবে।
ও আচ্ছা জানতাম না, আসতেছি,
ঠিক আছে ঠিক আছে বেচে থাক মা, স্বামি সন্তান নিয়ে সুখে থাক।
কি বল্লেন আপনি? ( রাগি মুড)
বয়ড়া না কি? আমি এক কথা দুইবার বলি না। এখন যান গিয়ে ঘুমায়ে পড়েন আমি এখন মুভি দেখব, মুভি না দেখলে আমার ঘুম আসে না। আর হ্যা যদি নাক ডাকেন গলা টিইপা মাইরা ফালামু। আর কোল বালিশ টা আমার পাশে রাখেন ওটা ছাড়াও আমার ঘুম হয়না।
আমার নাক ডাকা অভ্যাস নাই, আর মুভি দেখবেন মানে! বাসর ঘরে কেও মুভি দেখে! জানেন এই রাত নিয়ে আমার কত সপ্ন?
আপনাকে ত ভাল মেয়ে মনে করছিলাম, বাবা মা ও বল্ল ভদ্র ঘরের মেয়ে, আপনি ত সব বিশ্বাস এক সাথে ভেঙ্গে দিলেন।
মানে?????
মানে বুঝেন না? কি সাংঘাতিক মেয়েরে বাবা বিয়ের আগে বাসর নিয়ে চিন্তা করে। ছি ছি ছি ছি<
ওটা সব মেয়েরাই করে আমি একা না।
সাহস ত কম না আপনার,, স্বামির মুখে মুখে কথা বলতেছেন? যান ঘুমান গিয়ে
আমার ঘুম আসতেছেনা…
ওওওওও, তাহলে এক কাজ করেন আপনি আমার পা টা টিপেন আমি মুভি দেখি।স্বামির পায়ের নিচে স্ত্রির বেহেস্ত। পা টিপে দিলে তারা তারি বেহেস্ত পাবেন। নেন টিপেন, ( বলেই বালিশ টা সোজা করে খাটে হেলান দিয়ে মুভি দেখা শুরু করলাম, সে পা টিপছে আমি মুভি দেখছি, আহহহ কি যে মজা লাগতেছে )
মুভি দেখছি “বেবিস ডে আউট” অনেক মজার একটা মুভি, হাহাহাহাহাহা, হুহুহুহুহুহুহু
এই যে ম্যাডাম পা টিপা বাদ দিয়া মাথাটা একটু টিপে দেন, মাথা ব্যাথা করতেছে হাসতে হাসতে।
জ্বি দিচ্ছি,
( যা শালা ঘুমিয়ে পরছিলাম কখন? একি মহারাণি সারা রাত কি এভাবেই ছিল? মাথা টিপতে টিপতে কাধের উপরই শুয়ে আছে, চোখ দুইটাও কেমন ফোলা ফোলা, কাদছে মনে হয় অনেক ,নাহ এতটা করা ঠিক হয় নাই। আহ কি মায়বি চেহারা দেখলেই প্রেমে পড়তে মন চায়। পড়ছিলাম ও, কিন্তু মাইয়া আমারে পাত্তা দেয় নাই। আমি আকাশের জন্য কত মেয়ে পাগল আমি অন্যদের পাত্তা দেয়না আর একটা পুচকে মেয়ে আমায় এভয়েট করে! প্রথম যেদিন দেখি সেদিনই ফিদা হয়ে গেছিলাম, কয়েক হাজার টাকার জুতা নষ্ট করছি তাও ওরে পটাইতে পারি নাই। একদিন তার বাড়ির সামনে গিয়েছিলাম,কয়েক গুচ্ছ ফুল দিয়ে বলেছিলাম নিলিমা আমি তোমাকে ভালবাসি,, আমায় কুত্তা দিয়ে দৌড়ানি দিছিল। হঠাৎ বাবা মা বিয়ের জন্য পিড়াপিড়ি করছিল পাত্রি নাকি মায়ের বান্ধবির মেয়ে। পরে যখন মহারাণির ছবি দেখি এক পায়ে দাড়িয়ে গিয়েছিলাম বিয়ে করার জন্য। আমায় এত দিন কষ্ট দিছে আর আমি ওনাকে এমনিতেই ছেড়ে দিব? যাকে পাবোনা বলে কত রাত না ঘুমিয়ে কাটাইছি তার হিসেব নেই, আর আজ সেই আমার কাধে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে, আহহহ কি শান্তি, জাগাবো? নাহ থাকনা কিছুক্ষণ, ওই যে ম্যাডামরা মনে হয় চলে আসছে, দরজায় নক করছে। মহারাণি মনে হয় সজাগ পাচ্ছে ঘুমের ভান করে পরে থাকি)
ওওওওমমমমম, এই কি করছেন ছাড়েন ছাড়েন( নিলিমা)
অই কে কে কে? অহ আপনি? আপনি আমার বুকে কি করেন?
আপনিই ত ধরে আছেন ( লজ্জাবতী) ছাড়েন না ভাবিরা ডাকছে।( নিলিমা)
ফাইজলামি করেন? আপনাকে আমি ধরতে যাব কোন দুঃখে? আপনিই ত শুয়ে ছিলেন আমি কোলবালিশ মনে করে ধরছি। সরেন ওয়াক, ছি ছি ছি, আপনাকে আমি জড়ায়ে ধরছি ছি, যাই গোছল করে পবিত্র হয়ে আসি, ছি ছি ছি আজ এভাবে আমায় আপনি কলঙ্কিত করবেন আমি ভাবতেও পারিনি, আমার ঘুমের সুযোগে আপনি আমার উপর ছি ছি ছি, না জানি আর কত কি করছেন,!
ওই আপনি কাল রাত থেকে ওল্টা পাল্টা কথা বলতেছেন, বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু( নিলিমা)
হইছে হয়ছে যান দরজা খুলে দেন, এখন সাধু সাজতে আসছে।
কি ঘুম ভাঙ্গল?( ভাবি-1)
দেখ দেখ রাতে মনে হয় ঘুমাতে পারে নাই, চোখ দুইটা কেমন ফোলা ফোলা লাগছে(ভাবি-২)
আরে ঘুমাবে কেমনে সরা রাত ত হাসা হাসির শব্দই শুনলাম ঘুমাবে কখন (ভাবি-৩)
(যা শালা আমি হাসলাম মুভি দেখে আর বিশেষজ্ঞ দল কি গবেষণা করতেছে)
দেবর জি রাতে কি হল? (ভাবি-1)
আরে কিছুই হয়নাই আমি ইয়ে দেখছি, আর ও টিপে……
কি অসভ্যরে বাবা এই চল চল মুখে কিছুই আটকায় না ( সবাই মুখে কাপর দিয়ে দৌড়)
হায়রে বিপদে পড়লে এমনই হয়, কি বলব না শুনে ভেবে নিছে,
এই যা এটা কি করলা তোমরা?
কেন পানি ঢাল্লাম। তারা তারি গোসল করে আয়, আমরা ওকে নিয়ে যাচ্ছি।
যা বোঝার বুঝুক আমি ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে বাজারে গেলাম, ওহ বলাই ত হয়নি আমি বাবার ব্যবসা দেখাশুনা করি, আর ও আমাদের দোকানের সামনে দিয়েয় রোজ কলেজে যেত।
দোকানে গিয়ে বসে ফেসবুক এ ঢুকে দেখি আমার বউ রিকো: দিছে, একসেপ্ট করি নাই ডিলিট করে দিছি, সাথে বল্ক ফ্রি।
কিরে আকাশ তুই এখানে কি করস? তকে দোকানে আসতে বলছে কে? (বাবা)
না বাবা কেউ বলেনি আমি একাই আসছি,
এই মুহুর্তে বাড়ি যাবি, আর এক সপ্তাহ এদিকে আসবিনা।
( বাহ অন্যদিন বললে বের হতে দিত না আর আজ ৭ দিন এর ছুটি দিচ্ছে,)
বিছানায় শুয়ে গেমস খেলছি এমন সময় নিলিমা দরজা বন্ধ করে আমার পাশে এসে বসল।
আমাকে আপনি এভয়েট করছেন কেন? এই বিয়েতে আপনার মত ছিল না?( নিলিমা)
ওই এখন বকর বকর করবেন না ত, খেলতে দেন। মত না থাকলে কি বিয়ে করতাম?
তাহলে এমন করছেন কেন আমার সাথে?
বিছানায় শুয়ে গেমস খেলছি এমন সময় নিলিমা দরজা বন্ধ করে আমার পাশে এসে বসল।
আমাকে আপনি এভয়েট করছেন কেন? এই বিয়েতে আপনার মত ছিল না?( নিলিমা)
ওই এখন বকর বকর করবেন না ত, খেলতে দেন। মত না থাকলে কি বিয়ে করতাম?
তাহলে এমন করছেন কেন আমার সাথে?
আম্মাআআআ আম্মাআআআ(আমি)
কিরে আকাশ এমন চিল্লাচ্ছিস কেন?(মা)
ওকে কিছু খেতে দাওনি কেন এখনও?(আমি)
কিছুক্ষণ আগেই ত আমি নিজ হাতে খাওয়াইলাম!(মা)
কই নিলিমা ত বলছে ওর নাকি খুব খুধা লাগছে, সেই কখন থেকে আমায় বলছে, যাও নিয়ে যাও ভাল করে খায়নি হয়তবা লজ্জায়। দেখ দেখ মুখটা কেমন শুকিয়ে গেছে, আচ্ছা তুমরা কি চাও আমার বউটা না খেয়ে মরুক? যদি এই চাও তাহলে আমায় বিয়ে করালে কেন?(আহ কি লজ্জা, লজ্জায় মুখটা লাল হয়ে গেছে)
মা বিশ্বাস করেন আমি ওনাকে খাওয়ার ব্যাপারে কিছু বলিনাই, ওনি মিথ্যা বলতেছে, বলেই কান্না শুরু করে দিছে(নিলিমা)
তুই আর মানুষ হইলিনা আকাশ, আমি জানি মা ও ফাজলামি করতেছে, আরে ওর বিষয়ে ত তুমাকে বলেছিই তাই না? তাইবলে কি কাদতে হবে?)(মা)
বাহ আম্মা ১ দিনও হয়নাই ও আসছে আর ওর পক্ষনিয়ে কথা বলতেছ? আম্মা ও নেকামি করতেছে আর আমি তোমার নিজের ছেলে তোমাকে কখনও মিথ্যা বলতে পারি? তোমার বাবার কসম ও আমায় বলছে, ওর মুখটা দেখ কেমন শুকিয়ে আছে।এখনই ওর বাড়ি থেকে লোকজন আসবে তখন কি ভাববে বল?
আরে তাই ত মুখটা কেমন শুকিয়ে আছে চল ত মা কিছু খাবে, এই বলে মা ওকে টানতে টানতে নিয়ে গেল। ( যখনই আমি মার বাবার কসম দেই মানে আমার নানার কসম দেই তখনই আমার কথা বিশ্বাস করে, অবশ্য সে এখন আমাদের মাঝে নাই তার পরও আমার অনেক উপকারে লাগে)
ওদিকে নিলিমা অসহায় দৃষ্টিতে মার দিকে তাকিয়ে আছে আর বলতেছে মা আমি সত্যি খেতে চাইনি ওনি আমাকে…
চুপ কর ত মা, আয় আমি আবার খাইয়ে দিচ্ছি,.
মা ওকে খাইয়ে দিচ্ছে, খেতে চাচ্ছেনা তারপরও জোর করে খাওয়াচ্ছে, এতিমের মত মার দিকে তাকাচ্ছে আর বাঘের মত আমার দিকে তাকাচ্ছে বুঝাতে চাচ্ছে একবার সুযোগ আসলে মশাই ইচ্ছামত সাইজ করব, আর আমি এক পৈচাশিক আনন্দে রুম টা আবার বন্ধ করে লুঙি ডান্স শুরু করলাম।
যথারিতি শুশুর বাড়ির লোকজন আসল, তাদের খাওয়ার পর্ব শেষ করে আমরা রেডি হচ্ছি তাদের বাড়ি যাওয়ার জন্য, এমন সময় কিছু বন্ধু বান্ধবী আসল বিদায় নেওয়ার জন্য, সবাইকে বিদায় দেওয়র সময় কোলাকুলি কররাম এমনকি ওকে জালানোর জন্য বান্ধবীদের কেও বাদ দিলাম না। ঔষধ খুব ভালই কাজ করেছে, দেখে মনে হচ্ছে ওর চুল ধরে ধুলাই করতেছে মনে মনে। আমি কিছু না বলে বিদায় দিলাম ওদের। তার পর ওদের বাড়িযাওয়ার জন্য তেরি হলাম, এমন সময় আমার শশুর শাশুরি আসল আমাদের রুমে, এসে দেখে নিলিমা মন খারাপ করে বসে আছে, শশুর মশাই বউ কে বলল কিরে মা মন খারাপ কেন?
(কোন সুযোগ না দিয়ে) কি আর বলব বাবা বলেন সব সময় পাগলামী কি মানায়?বায়না ধরছে ফুসকা খাবে, আমি বল্লাম যে এখন আনতে পারব না তোমাদের বাড়িতে যাওয়ার সময় কিনে নিব এমনিতেই অনেক দেরি হয়েগেছে, আর এতেই দেখেন কি অবস্থা।
কিরে মা আকাশ বাবা ত ঠিকই বলছে, চল রাস্তায় যাওয়ার সময় কিনে নিব, এখন চল। আর বাবা আকাশ আমার মেয়েটা একটু জেদী তুমি বাবা একটু কষ্ট করে মানিয়ে নিও বাবা।(শশুর)
কি যে বলেন না বাবা এখানে কষ্টের কি আছে? ও ত আমার কাছেই আবদার করবে,
চল বাবা দেরি হয়ে যাচ্ছে।(শশুর)
জ্বি বাবা চলেন বলেই আগে হাটা শুরু করলাম।(হালকা খুড়িয়ে)
কি বেপার আকাশ তোমার পায়ে কি হয়েছে?(শশুর)
তেমন কিছুনা বাবা, কাল রাতে নিলিমা বায়না ধরল কোলে করে ছাদে নিয়ে যেতে হবে তাই যাওয়ার সময় পায়ে হালকা ব্যাথা পায়ছি,(আমি)
(শশুর শাশুড়ি দুজনেই হালকা লজ্জা পেল)
তারপর শশুর দের সাথে চলে গেলাম তাদের বাড়িতে, তাদের দেখিয়ে নিলিমার হাত ধরে ছিলাম সারাটা পথ। অবশ্য মহারানি কিছু বলেন নাই, হয়ত হালকা ভাললাগা কাজ করছে তার মাঝে, কিন্ত সারাটা পথ মন খারাপ ছিল।
তার বাড়িতে নামা মাত্র ৩৬০ ডিগ্রি এঙ্গেলে তার মুড পাল্টে গেল। দিব্যি হাসি খুশি মুখে সব কাজ করতেছে সবার সাথে কথা বলতেছে আর আমার দিকে তাকি রহস্যময়ী হাসি দিচ্ছে। নতুন জামায় দেখতে মুটামুটি অনেকেই আসছে। কপালটা মনেহয় আমার খুব ভাল শালা শালীর অভাব নাই। শালীরা সবাই ঘিরে ধরছে আর কি হল দুলাভাই কি হল দুলাভাই করতেছে, আমিও চাদের বুড়ার মত রুপকথার গল্প শুনিয়ে যাচ্ছি। একেক টার কি লজ্জা। রান ১০.৩০, সবাই মিলে খাবার টেবিলে বসছি, নিলিমা আমার পাশে বসছে, বার বার আমার দিকে তাকাচ্ছে আর হাসতেছে,
বুজলে বাবা আকাশ আমার মেয়েটা একটু জেদী হলেও অনেক লক্ষী, তার রান্নার হাত অনেক ভাল।(শশুর)
যথঅরিতি সবাই শুরু করছে আমিও করলাম, হালকা মুখে দিছি দেখি ঝালে মুখ পুড়ে যাওয়ার অবস্থা।তার মানে এই হল হাসির কারন? কোন মত পানি দিয়ে গিলে বল্লাম জি বাবা অনেক ভাল। এই বলে নিলিমার দিকে তাকিয়ে বল্লাম নিলিমা সরি,
ভূত দেখার মত চমকে উঠে বলল সরি কেন বলতেছেন?নিলিমা
সবাই আমার দিকে তাতাল।
(শশুড় এর দিকে তাকিয়ে)বাবা বিষয়টা যদিও লজ্জার তার পরও বলি, আসলে নিলিমা কাল রাতে আরেকটা আবদার করছে যে আমরা পাশাপাশি খেতে বসলে ও আমাকে খাইয়ে দিবে আর আমি ওকে খাইয়ে দিব, ও যদি ওভাবে খেতে নাও চায় জোর করে খাওয়াব, আর যদি না খাওয়াই ও নাকি ৭দিন আমার সাথে কথা বলবে না।আমি ৭ দিন কথা না বলে থাকতে পারবনা বাবা। নাও হা কর বলে জোর করে তাকে খাইয়ে দিলাম। এটা দেখে আমার শশুর শাশুড়ির চোখেদেখি জল এসে গেছে।
(নিলিমার চোখেও জল আসছে কিন্ত্েকেমাত্র আমিই জানি ওটা ভাল লাগার না ঝালের অবদান, আমার সাথে পাকনামি? বুঝ এবার ঠ্যঅলা কারে বলে,)
কি ব্যপার নিলু(আদর করে) চোখে পানি কেন? নাও পানি খাও, বলেই নিজ হাতে পানি খাইয়েদিলাম কিন্তু আর একবার খাইয়ে দিতেই চোখে পানি নিয়েই দৌড়িয়ে রুমে চলে গেল, কৌশলে প্লেটে হাত ধুয়ে আমিও তার পিছু পিছু গেলাম যাতে আবার খেতে দেয়।
নবীনতর পূর্বতন