ভালবাসার গল্প আলো ছায়ার ভালোবাসা – পর্ব ৩

Related image
২য় পর্বের পর থেকে


“তুমি কোথায়?”
“আমি অফিসে, তোমার কণ্ঠ এমন শোনাচ্ছে কেন?” আশিক আতঙ্কিত কণ্ঠে জানতে চায়।
“তুমি তাড়াতাড়ি বাসায় আসো, অহনার তীব্র মাথা ব্যথা ডাক্তারের কাছে নিতে হবে”।
“আচ্ছা তুমি চিন্তা করোনা আমি এক্ষণই আসছি” বলেই আশিক তড়িঘড়ি করে হাতের কাজ ঘুচিয়ে অফিসের বসকে জানিয়ে বেরিয়ে যায়।
অহনা যখন ক্লাস করছিল তখন হঠাৎ করেই সে মাথা ঘুরিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। স্কুলের শিক্ষক ও আয়া অহনার মাথায় পানি দিলে সে খানিকটা সুস্থবোদ করে। তারা অহনাকে বাসায় দিয়ে যায় এবং ডাক্তার দেখাতে বলে। অনেকদিন থেকেই অহনার মাথায় যন্ত্রণা করতো, তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতোনা। তাই আশিক কিংবা সোনিয়া কেউই বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দেয়নি। ভেবেছে এমন-তো হতেই পারে। কিন্তু আজ যন্ত্রণাটুকু অন্যদিনের চেয়ে বেশীক্ষণ থাকছে। সোনিয়া আশিককে ফোন দিয়ে তার আসার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। এই মুহুর্ত্বে অহনা আবারো অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তাই সোনিয়া আর আশিকের জন্য অপেক্ষা না করে অহনাকে নিয়ে সিএনজিতে চড়ে হাসপাতালের দিকে রওনা হয়। আশিককে ফোন করে সরাসরি হাসপাতালে চলে আসতে বলে।
আশিক চলে এলে সে হাসপাতালে টিকেট কেটে অহনাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যায়। ডাক্তার অহনা ও আশিকের কাছ থেকে সব শুনে ব্যবস্থাপত্রে অহনার ব্রেনের সিটি স্ক্যান, এমআরআই করিয়ে তাড়াতাড়ি রিপোর্ট নিয়ে আসতে বলে।
পরদিন আশিক রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তারের কাছে যায়। ডাক্তার রিপোর্টের ফাইলটি নিয়ে মনোযোগ দিয়ে রিপোর্টটি দেখতে দেখতে গম্ভীর হয়ে যান। ডাক্তারকে নীরব থাকতে দেখে আশিক প্রশ্ন করে “কেমন দেখলেন ডাক্তার সাহেব?”
“লক্ষণ ভালো মনে হচ্ছে না”
“কেন, কি হয়েছে?”
“যা ধারনা করছিলাম,ব্রেন টিউমার। টিউমারটি বিনাইল অবস্থানে নেই এটি ম্যালিগন্যান্ট বা ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে”।
“কি বলছেন ডাক্তার সাহেব!” আশিক উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
“উত্তেজিত হবেন না, আপনার মেয়েকে বাঁচাতে হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি অপারেশন করতে হবে। যদিও তা ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল। কিন্তু আপনার মেয়েকে বাঁচাতে হলে এর বিকল্প নেই। কারণ ব্রেনে টিউমারের বৃদ্ধির হার অতি দ্রুত ঘটে। আমি আরো কিছু টেস্ট লিখে দিচ্ছি আপনি তাড়াতাড়ি সব ব্যবস্থা করুন”
ডাক্তারের কাছ থেকে ফিরে আশিক কারো সাথেই কথা বলতে পারেনা। সোনিয়া এসে জানতে চায় ডাক্তার কি বলল, কিন্তু আশিক নির্বাক।
“আমাদের অহনার কি খুব খারাপ কিছু হয়েছে?” সোনিয়া ভয়ার্ত কণ্ঠে প্রশ্ন করে।
“ব্রেন ক্যান্সার” আশিক নিরুত্তাপ উত্তর দেয়।
“কি বলছ এসব! বল তুমি মিথ্যা বলছ, মিথ্যা বলছ তুমি” সোনিয়া বিলাপ করে উঠে।
“ডাক্তার বলেছে যত শীঘ্র সম্ভব অপারেশন করাতে, নাহলে আমাদের অহনা বাঁচবেনা। আমি এত টাকা কোথায় পাব এখন?” আশিক আপন মনেই বলতে থাকে।
পাশের রুম থেকে অহনা এসে আশিকের সামনে এসে দাড়ায়।
“বাবা, মা তোমরা কাঁদছ কেন?”
“না মা, কাঁদছি কোথায়! এই-তো হাসছি দেখো”। আশিক অহনাকে কোলে তুলে নেয়, হাত দিয়ে দুচোখ মুছে হাসার চেষ্টা করে। সোনিয়া আঁচলে মুখ ডাকে।
আশিক ভাবতে থাকে কিভাবে সে অহনার চিকিৎসার খরচ জোগার করবে। অনেকদিন যাবত চাকরি করেও আশিকের কোন সঞ্চয় নেই। তার কাছে এখন দুটো পথ খোলা। এক মেয়ের জীবন অন্যটি আদর্শ। মেয়ের জীবন বাঁচাতে হলে আদর্শ ত্যাগ করতে হবে আবার আদর্শ ধরে রাখতে হলে মেয়ের জীবন উৎসর্গ করে দিতে হবে। সে সিদ্ধান্ত নেয় নিজের আদর্শকে সে মেয়ের জীবনের বিনিময়ে উৎসর্গ করে দেবে। তাই সে অফিসে এসে সেই এক্সেসরিজ সাপ্লায়িং এজেন্টকে ফোন দেয় এবং সবকিছু চূড়ান্ত করতে বলে।
অহনা স্কুলে যায়নি, সোনিয়া ঘুমাতে পারেনি সারারাত তাই তার চোখ লাল হয়ে রয়েছে। হঠাৎ সে কলিং-বেল বাজার শব্দ শোনতে পায়। সোনিয়া দরজা খুলে অবাক হয়ে দাড়িয়ে থাকে। তার সামনে দাড়িয়ে রয়েছে অপূর্ব হাতে একগুচ্ছ গোলাপ।
“আপনি!” সোনিয়া অবাক ও বিস্মিত হয়ে বলে উঠে।
“হুম, আমি” অপূর্ব জবাব দেয়।
“আমার ঠিকানা কোথায় পেলেন?”
“মানুষ ভালো-ভাবে খুঁজলে পৃথিবীতেও স্বর্গ পেতে পারে আর আমি তোমার ঠিকানা পাব না!”
“আপনি চলে যান, আপনার সাথে আমার কোন কথা নেই” সোনিয়া দরজা লাগিয়ে দিতে দিতে বলে।
“সোনিয়া দাড়াও, আমার কথাটুকু অন্তত শোন” অপূর্ব কথা শোনার আকুতি জানায়।
“না, আপনি চলে যান আপনার সাথে আমার কোন কথা নেই” সোনিয়া সজোরে অপূর্বের সামনে দরজা বন্ধ করে দেয়। দরজার পাশেই সে বসে পড়ে, তার চোখ থেকে ঝরতে থাকে অশ্রুধারা।
দরজার ওপাশে অপমানিত-ভাবে অপূর্ব দাড়িয়ে থাকে। তবুও তার মনে সোনিয়া জন্য ঘৃণা জন্মায় না। অনেকক্ষণ এভাবেই দাড়িয়ে থেকে সে চলে যায়।
,
বিকেলে আশিক অফিস থেকে ফিরে অহনাকে নিয়ে ডাক্তারের টেস্টগুলো করাতে নিয়ে যায়। ডাক্তারকে রিপোর্ট দেখালে ডাক্তার অপারেশন তাড়াতাড়ি করতে চাপ দেন। অহনার মাথার যন্ত্রণাও প্রতিদিনই বাড়তে থাকে। তাই আশিক অহনার দিকে তাকিয়ে অপারেশনের দিনক্ষণ ঠিক করে নেয়। যদিও সে জানেনা কত টাকা ম্যানেজ করতে পারবে।
,
আশিক বাসায় ফিরে সোনিয়াকে সব জানায়। সোনিয়াও জানেনা কিভাবে টাকার ব্যবস্থা হবে। সে আশিককে চাপ দেয় “আমি কিচ্ছু বুঝিনা, কিচ্ছু জানিনা, আমি যে কোন মূল্যে আমার মেয়েকে চাই”
,
“অধৈর্য হয়ো না, আমি সব ব্যবস্থা করব। আমার উপর তুমি আস্থা রাখ” সে সোনিয়াকে সান্ত্বনা দেয়।
,
“সব কিছুর জন্য তুমিই দায়ী, তুমিই মেয়ের মাথা ব্যথাকে গুরুত্ব দাওনি। আজ যদি আমার মেয়ের কিছু হয়” বলতে বলতে সোনিয়া কেঁদে ফেলে।
,
আশিক সোনিয়াকে জানায় আগামী সপ্তাহেই অহনার অপারেশন।
,
অপূর্ব সোনিয়ার কাছ থেকে অপমানিত হয়ে আসার পরও সে সোনিয়াকে ভুলতে পারেনা। দেশে ফেরার পর থেকে তার ধ্যানে সর্বদায় থাকে সোনিয়া। বিভিন্ন মাধ্যমে সে সোনিয়া সব খবরই সংগ্রহ করে নেয়। সে জানতে পারে সোনিয়ার মেয়ে অহনার ব্রেনে ক্যান্সার ধরা পরেছে। তাই সে চায় অহনার চিকিৎসার সব খরচ বহন করতে। সেই উদ্দেশ্যে সে সোনিয়ার মোবাইলে ফোন দেয়। কয়েক রিং বাজতেই সোনিয়া ফোন রিসিভ করে।
,
“হ্যালো”
,
“হ্যাঁ সোনিয়া, আমি অপূর্ব। ফোন রেখে দিওনা প্লিজ” অপূর্ব আরতি জানায়।
,
“কি বলবেন?”
,
“শোন, অহনার চিকিৎসার সব খরচ আমি দেব”
,
“আপনি আমাদের পারিবারিক সমস্যায় নাক গলাতে আসবেন না প্লিজ” এই বলে ফোন রেখে দেয় সোনিয়া।
,
অপূর্ব আবারো ফোন দেয় কিন্তু সোনিয়া ফোন রিসিভ করে না। সোনিয়া জানে অপূর্ব চিকিৎসার খরচ বহন করলে এর বিনিময়ে অপূর্বকে কিছু দেওয়ার দায় সোনিয়ার কাঁধে আসবে। আর অপূর্ব চাইবে সোনিয়ার ভালোবাসা। সোনিয়া আশিকের সংসারে এসে কখনোই নিজেকে সুখী ভাবেনি, সে সুখী হতে পারেনি তার চাওয়া ও পাওয়ার ভেতর অনেক তারতম্য থাকার দরুন। অপরের সাথে নিজেকে মেলাতে গিয়েই সে অসূখী হয়েছে। অপূর্বের ভালোবাসায় সে হেরে গেলে সে হয়ত সুখ পাবে কিন্তু আশিকের জীবনটি তাতে ধ্বংস হয়ে যাবে। নিজের সুখের জন্য সে আশিকের জীবনটি ধ্বংস করতে চায় না।
,
আশিক মেয়েকে বাঁচাতে নিজের আদর্শ বিক্রি করে এক্সেসরিজ সাপ্লায়িং কোম্পানির কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে যাকে বলা হয় কমিশন। বিনিময়ে সে তার নতুন অর্ডারের সকল এক্সেসরিজের কাজ ঐ কোম্পানিকে সাপ্লাই করতে দিয়ে দেয়।
,
সেই টাকাতেই অহনার অপারেশন হচ্ছে। অহনাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে। তার আগে আশিক ও সোনিয়ার কাছ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্জন ডেড বন্ড সার্টিফিকেটে সাইন করিয়ে নেয়। সার্টিফিকেটে সাইন করার সময় তারা দুজনই মনের অজান্তে কেঁদে ফেলে। তারা যেন নিজ হাতে মেয়ের মৃত্যুর সার্টিফিকেট লিখে দিল। তারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে আল্লাহ যেন তাদের মেয়েকে সুস্থ করে তোলেন।
,
তারা অপারেশন থিয়েটারের সামনেই অপেক্ষা করতে থাকে। কিন্তু সময় যেন কাটেনা। প্রতিটি মিনিট সেকেন্ডে ভাগ হয়ে যেন ন্যানো সেকেন্ডে রূপান্তরিত হচ্ছে। এর প্রতিটি ধাপই যেন তাদের দুজনকে স্পর্শ করে যাচ্ছে। তাদের মনে হচ্ছে সময় এত দীর্ঘ কেন?
,
অপেক্ষার পাত্রে এক সময় জল পরা বন্ধ হয়। মুখে ব্যর্থতার ছাপ নিয়ে অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে আসে সার্জন।
,
সার্জন আশিক ও সোনিয়ার সামনে এসে পরাজিত খেলোয়ারের মত বলে “অপারেশন আন-সাকসেসফুল, আমরা দুঃখিত। আপনার মেয়েকে আমরা বাঁচাতে পারিনি”।
,
ডাক্তার কি বলছে সোনিয়া যেন তা শোনতে পায়নি। সে নির্বাক হয়ে মাটিতে বসে যায়। আশিকও অনেকক্ষণ কিছু বলতে পারেনা। একসময় সোনিয়া বিলাপ করে উঠে “আমার সবইতো শেষ হয়ে গেল, এখন আমি কাকে নিয়ে বাঁচব, কেন বাঁচব?” বলতে বলতে সে মূর্ছা যায়। হাসপাতালে নার্সরা এসে তাকে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করে, সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করে আশিক নিজেও কিন্তু আশিককে কে সান্ত্বনা দিবে।
,
অহনার অন্তুষ্টিক্রিয়া সেরে তারা দুজন বাসায় ফিরে এসেছে। সোনিয়া এখন আগের চেয়ে শান্ত তবে সবসময় অহনার ব্যবহৃত জিনিসগুলো সে নেড়েচেড়ে দেখে। কথাও বলে অনেক কম। আশিকের দিকে তাকায় কেবলই ঘৃণার চোখে। তার বিশ্বাস আশিকের কারণেই তার মেয়ে মারা গেছে। আশিক সোনিয়াকে গ্রামে পাঠিয়ে দিতে চায় কিন্তু সোনিয়া যাবেনা। আশিকের বন্ধু ও তাদের স্ত্রীরা সোনিয়ার সাথে কথা বলতে আসে, তাকে সান্ত্বনা দিতে চায় কিন্তু সোনিয়া তাদের সাথেও তেমন কথা বলেনা।
,
অপূর্বের সাথে এখন সোনিয়া স্বাভাবিকভাবেই কথা বলে। এখন আর তাকে আপনি সম্বোধন না করে তুমি বলে ডাকে। সোনিয়ার কাছে এখন আশিকের চেয়ে অপূর্বকেই বেশী আপন মনে হয়। সে সিদ্ধান্ত নেয় আশিকের সাথে আর থাকবেনা। যার কারণে তার মেয়ে মারা গেল তার সাথে একঘরে থাকা তার পক্ষে আর সম্ভব নয়। অপূর্বও তাকে গ্রহণ করতে রাজি।
,
আশিক অফিসে গিয়ে শোনতে পায় যে কোম্পানিকে সে এক্সেসরিজ সাপ্লাইয়ের কাজ দিয়েছিল তারা সব খারাপ মানের জিনিস সাপ্লাই দিয়েছে। তার কমিশন নেওয়ার কথাটুকুও তখন অফিসে জানাজানি হয়ে যায়। সে অপমানে লজ্জায় চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে চলে আসে।
,
বাসায় ফিরে এসে দেখে দরজায় তালা ঝুলানো। অসময়ে দরজায় তালা ঝুলবে কেন? তাহলে সোনিয়া কোথায়? এসব চিন্তা তার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। তার কাছে থাকা চাবি দিয়ে সে বাসায় ঢুকে। বাসায় ডাইনিং টেবিলের উপর সে একটি চিঠি পায়। চিঠিটি সোনিয়ার হাতের লেখা, সে এখানে লিখেছে “তোমার সাথে থাকা আর আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছেনা। আমি চলে গেলাম যেদিকে চোখ যাই। ভালো থেকো”।
,
আশিক বুঝতে পারেনা তার কি এমন অপরাধ যার জন্য সোনিয়া তাকে একা ফেলে চলে যাবে। আশিক অদৃষ্টে বিশ্বাস করে। সে বিশ্বাস করে যা ঘটেছে তার জন্য ভাগ্যে লেখা ছিল বলেই ঘটছে। অনেকেই বলে থাকে তার ভাগ্য সে পরিবর্তন করে ফেলেছে। সেকি জানত তার ভাগ্যে কি লেখা রয়েছে? যা সে জানতোনা তা সে কিভাবে পরিবর্তন করবে। কিন্তু আশিক বিশ্বাস করে একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ব্যতীত আর কেউ কারো ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেনা। তাই আশিক তার বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সৃষ্টিকর্তার উপরই আস্থা রাখে। সে ভাবতে থাকে কোন পাপ করার কারণেই তার জীবনে এমন প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে।
,
আশিক ঘর থেকে বেরিয়ে সোনিয়াকে খুঁজতে যায়। কিন্তু এই পৃথিবীর কোন পথে তাকে খুঁজবে। আশিক নিশ্চিত সোনিয়া তার বাবার বাড়ি যায়নি। সে তার বন্ধুদের বাসায় ফোন করে জানতে চায় সোনিয়া তাদের এখানে গিয়েছে কিনা। কিন্তু সকলেই তাকে না’বোধক শব্দ উপহার দেয়। আশিক শহরের অলিগলি ঘুরতে থাকে কিন্তু কোথায় সে তার সোনিয়াকে পায়না।
,
আশিক পা ছড়িয়ে বসে রয়েছে বাসার সামনের রাস্তার ফুট-ওভার ব্রিজের উপর। তার নিচ দিয়ে প্রতি মুহুর্ত্বে চলে যাচ্ছে শত শত হাজার হাজার গতিশীল যন্ত্রদানব। এসব যন্ত্রদানব মানুষকে করেছে গতিশীল আবার এসব যন্ত্রদানবই অনেককে গতিহীন করে দেয়। অনেককে অতিদ্রুত গন্তব্য-স্থলে পৌছায় আবার অনেককে অসময়ে পরপারে পৌছিয়ে দেয়। আশিকের মাথার উপর আকাশে তখন গোধূলির রং। কিছুক্ষণ পরই গোধূলি মোরকবন্দি হবে রাতের আঁধারের। দিনটিও তখন অপেক্ষায় থাকবে নতুন ভোরের। কিন্তু আশিক এখন যাবে কোথায়? যে গৃহে অহনা নেই, যে গৃহে সোনিয়া নেই সে গৃহে সে একা কিভাবে থাকবে।
,

হঠাৎ আশিক তার কাঁধে কারো হাতের অস্তিত্ব টের পায়, সোনিয়া তাহলে ফিরে এসেছে?
নবীনতর পূর্বতন