আর সবাই ভালবাসার মানে জানে না। এখনকার দিনে ভালবাসার বলতে তার দেহকেই বুঝাই।
তোমাকে ভালোবাসি। এই একটা কথা শুনেই আমাদের মাঝে নতুন সম্পর্কের দিন গোনা শুরু হয়। সামান্য দেখা বা অল্প দিনের কথায় আমরা একে অন্যের হয়ে যাই। কিন্তু ভেবে দেখেছেন সে কে? সে কি চায়? সে কি সত্যি ভালোবাসে? কিভাবে বুঝবেন যে সে আপনাকে ভালোবাসে কিনা?
আপনার জন্যই আজ আমার এই লেখা। অল্পতেই বুঝে নিন সেকি চায়, আপনাদের সম্পর্কটি ঠিক রাখার জন্য আসলে কি কি দরকার। এটা নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যাঁকে আপনি ভালোবাসেন, এমনকি যাঁকে নিয়ে সংসার নামক নতুন পর্ব সাজানোর কথা ভাবছেন সে আদৌ আপনাকে ভালোবাসে কি না এটা কি কখনো ভেবে দেখেছেন? না ভাবলে আজই ভাবুন। হয়তো অনেক দিন ধরেই আপনাদের সম্পর্কটি বেশ ভালোই যাচ্ছে। কিন্তু কিছু একটা ঘাটতি সম্পর্ককে পরিপূর্ণ করছে না। সম্পর্কে কিছু লক্ষণ থাকা খুবই জরুরি, যা ভালোবাসা সত্যি কি না তার প্রমাণ দেবে। প্রেমের সম্পর্ক কিংবা দাম্পত্য সম্পর্কে ভালো একজন সঙ্গী হওয়ার পাশাপাশি সত্যি ভালোবাসা আছে কি না সেটাও জানা বেশ জরুরি। তাহলে সম্পর্কটা ধীরে ধীরে অনেক বেশি মজবুত হবে ও ভালোবাসাময় হয়ে উঠবে।
১. ব্যাস্ততার মাঝেও আপনার কথা ভাবে?
একজন মানুষ কাজের সময়টাতে ব্যস্ত থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সে যতই ব্যস্ত থাকুক কাজে, কিছুটা সময় সে অবশ্যই বের করবে আপনার সঙ্গে কথার বলার জন্য। আপনার কথা সব সময় তার মনে থাকে এবং সে আপনার প্রতি কতটা যত্নশীল এটাই তার প্রমাণ। আর এই আচরণ থেকেই আপনি বুঝে নেবেন আপনার সঙ্গী সব সময় আপনার পাশে থাকবে।
২. আপনার পছন্দই কি তার পছন্দ?
দুজনের পছন্দ এক হবে এটা ভাবা খুবই অযৌক্তিক। কিন্তু ভালোবাসার মানুষটি আপনার পছন্দকে প্রাধান্য দেবে এটা ভাবা অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। বরং সে আপনার পছন্দকে বুঝবে এবং আপনার অনুভূতিকে মূল্য দেবে- এমনটা আপনি ভাবতেই পারেন। হয়তো সে ভয়ের চলচ্চিত্র দেখতে ভালোবাসে কিন্তু আপনি রোমান্টিক ছবির গুণমুগ্ধ দর্শক। সে যদি আপনাকে ভালোবাসে তাহলে সে আপনার পছন্দকেই প্রাধান্য দেবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সে প্রতিবারই আপনার পছন্দের কথা ভাববে আর আপনি তার অনুভূতিকে কোনো মূল্য দেবেন না, তাহলে তার আচরণেও পরিবর্তন আসতে পারে। তাই দুজন দুজনের পছন্দকে প্রাধান্য দিন।
৩. ভালো ও খারাপ যাই ঘটুক সঙ্গীকে জানান
ভালোবাসার সম্পর্কে বিশ্বাস থাকা খুবই জরুরি। আপনার সঙ্গী যদি আপনার কাছ থেকে কিছু লুকাতে চায়, তাহলে বুঝবেন তার ভালোবাসায় ঘাটতি রয়েছে। কারণ সে আপনাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারছে না। আর বিশ্বাস যদি নাই থাকে, তাহলে সে আপনাকে ভালো কী বাসল? তাই নিজের সাথে ভালো বা খারাপ যা কিছুই ঘটুক কিংবা কোনো খারাপ বা ভালো সংবাদ যাই হোক আপনি সব সময় নিজের পরিবারের মানুষগুলোর পর সঙ্গীকে জানান। তার সাথে আপনি ভাগাভাগি করতে চান খারাপ বা ভালো সব অনুভূতিই। আপনার সঙ্গী যখন এই ব্যাপারে বুঝতে পারবে, তখন সে এমনিতেই বুঝবে আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন।
৪. ছোট ছোট অনুভূতি
হতে পারে সেটা সবার সামনে অথবা একান্ত ব্যক্তিগত সময়ে, আপনি ছোট ছোট কিছু অনুভূতি প্রকাশ করে আপনার সঙ্গীকে বোঝাতে পারেন যে আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন। এই আচরণগুলো আপনাদের সম্পর্ককে আরো মজবুত করবে এবং সঙ্গী যে আপনাকে সত্যি ভালোবাসে এই আচরণগুলো থেকে আপনি কিছুটা হলেও প্রমাণ পাবেন।
৫. নিজের আপনজনদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া
যখন দেখবেন আপনার সঙ্গী আপনাকে তার আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুদের সঙ্গে নিজে থেকেই পরিচয় করিয়ে দিতে চাচ্ছে, তখন বুঝবেন সে আপনাকে সত্যি ভালোবাসে এবং সে আপনাদের সম্পর্কটিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। আপনি তার জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি সে সবার কাছে প্রকাশ করবে, যাতে তার মতো করে সবাই আপনাকে গ্রহণ করে।
৬. ‘আমরা’ সম্বোধনটি বেশি ব্যবহার করা
সে যখন কথা বলবে, তখন খুব ভালোভাবে খেয়াল করবেন সে কীভাবে কথা বলছে। যদি সে শুধু বলে ‘আমি এটা পছন্দ করি’, ‘আমি তোমাকে এভাবে দেখতে ভালোবাসি’ অথবা ‘আমি তোমার এই এই জিনিসটা পছন্দ করি না।’ তাহলে বুঝবেন সে শুধু নিজের কথাই চিন্তা করছে। আর যদি সে ‘আমরা’ সম্বোধনটি বেশি ব্যবহার করে অর্থাৎ ‘আমরা ভবিষ্যতে এমনভাবেই দুজনকে ভালোবাসব’, ‘আমাদের বাসাটা তোমার মন মতোই সাজাব’, ‘আমরা প্রত্যেক ছুটিতে দূরে কোথাও ঘুরতে যাব’ ইত্যাদি। এ ধরনের ‘আমরা’ শব্দটি যদি সে হরহামেশাই বলে থাকে তাহলে বুঝবেন তার সম্পর্কটিতে আস্থা রয়েছে; যা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য খুবই জরুরি।
৭. আপনার সিদ্ধান্তকে মূল্য দেয়
নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকা প্রেমিকা বা প্রেমিক কখনোই সম্পর্ককে সুখী হতে পারে না। সিদ্ধান্ত জানানো ভালো। কিন্তু সমস্যা হলো সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে গোঁ ধরে বসে থাকা। সিদ্ধান্ত তখনই নেওয়া ভালো যেখানে অপরপক্ষের মতামত থাকে। আর যদি আপনার সঙ্গী নিজে নিজেই সিদ্ধান্ত নেন এবং আপনার কথার কোনো মূল্য না দেন তাহলে বুঝবেন সে আপনাকে সত্যি ভালোবাসে না।