শিশুটি কি যথেষ্ট পানি পান করছে?

খুব ছোট শিশুরা নিজেদের চাহিদার কথা বলতে পারে না, তাই অভিভাবকেরই দায়িত্ব হলো যাতে সে যথেষ্ট পানি পান করে।

শিশুর পানির চাহিদা মেটানোর প্রধান উৎস বুকের দুধ, খাবার জল, অন্যান্য পানীয় ও খাবার। যেমন: তরমুজ, ফলের রস, স্যুপ প্রভৃতি। 
শিশুরা দ্রুতই শরীর থেকে পানি হারায়। আর তা হয় মূলত প্রস্রাব, মল ও ত্বক, শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে। পানি গ্রহণ ও পানি হারানোর মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকলে শিশুর ছোট্ট শরীরে পানির সমতা নষ্ট হয়ে যাবে এবং সে অসুস্থ হয়ে পড়বে। 
শিশুর পানির চাহিদার দৈনিক পরিমাণ তার পরিপাক ক্রিয়া, শ্রম, শরীরের গঠন, আবহাওয়া এবং সুস্থতা-অসুস্থতার ওপর নির্ভরশীল। ওজন অনুপাতে এক বছরের কম বয়সী শিশুর পানির পরিমাণ বেশি লাগে, শিশুর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে চাহিদার পরিমাণ কমে যায়। প্রথম ছয় মাস বয়সে বুকের দুধ পানির চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট। ছয় মাস পূর্ণ হলে পরিপূরক খাবারের সঙ্গে পানির জোগান দিলেই হবে। 
পানির ঘাটতি হলে পানিস্বল্পতা হয়, দেহের তাপমাত্রা ও শরীরের কর্মক্ষমতা অটুট রাখতে সমস্যা হয়। হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়, রক্তচাপ হ্রাস পায়, শিশু হঠাৎ মূর্ছা যেতে পারে, কোষ্ঠকাঠিন্য হয় এমনকি কিডনি সমস্যা ও কিডনিতে পাথর হওয়ার মতো ঝুঁকি তৈরি হয়। 
আবার যদি শিশু বেশি বেশি পানি পান করে তবে তা রক্তে লবণ-পানির সমতা নষ্ট করে।

এখন জেনে নিন শিশুদের গড়ে দিনে প্রয়োজনীয় পানির পরিমাণ * ৭-১২ মাস বয়সে ৮০০ মিলি* ১-৩ বছর বয়সে ১.৩ লিটার* ৪-৮ বছর বয়সে ১.৭ লিটার
ছেলেসন্তান* ৯-১৩ বছর ২.৪ লিটার* ১৪-১৮ বছর বয়সে ৩.৩ লিটার* ১৯ বছর বয়সে ৩.৭ লিটার
মেয়েসন্তান 
* ৯-১৩ বছর বয়সে ২.১ লিটার
* ১৪-১৮ বছর বয়সে ২.৩ লিটার
* ১৯ বছর বা তার বেশি বয়সে ২.৭ লিটার
আপনার শিশু ঠিকমতো পানি পান করছে কি না তা জানতে কিছু বিষয় লক্ষ রাখুন:
* গরমের দিনে পানিযুক্ত বা সরস ফলমূল ও খাবার খেতে দিন; যেমন: তরমুজ, শসা, টমেটো ইত্যাদি। 
* স্কুলে যে পানির বোতল দিচ্ছেন তা পুরোটা শেষ করছে কি না খেয়াল করুন। 
* গরমের দিনে খুব ঘামলে বা বেশি খেলাধুলা করলে পানি একটু বেশি পান করতে হবে। 
* মনে রাখবেন, পানির চাহিদা কোমল পানীয় দিয়ে মেটে না। 
* শিশুর প্রস্রাবের পরিমাণ ঠিকঠাক ও পরিষ্কার রঙের হচ্ছে কি না খেয়াল করুন।
নবীনতর পূর্বতন