কিছু কারণে মাথাব্যথায় নারীরাই সাধারণত বেশি আক্রান্ত হন। এসবের মধ্যে দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপজনিত মাথাব্যথা ও মাইগ্রেন অন্যতম।
মানসিক চাপজনিত মাথাব্যথা হলে সাধারণত অনুভূতিটা এমন হয় যেন মাথায় বা মাথার তালুতে কিছু একটা চেপে ধরে আছে। সারা দিনের কাজের শেষে ব্যথার তীব্রতা বাড়তে থাকে। তবে ব্যস্ততার সময় মনে হয় ব্যথাটা যেন একটু কম। এমন ব্যথা কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত থাকতে পারে; তবে মাঝখান কোনো দিনই পুরোপুরি ব্যথামুক্ত হয় না। এমন ব্যথা উপশমের জন্য মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। অনেক ক্ষেত্রে মাথাব্যথার চিন্তা থেকেই মাথাব্যথা বাড়তে থাকে। ব্যথানাশক ওষুধে এ যন্ত্রণার তেমন উপশম হয় না, বরং ক্রমাগত ব্যথানাশক ওষুধ সেবনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়।
মাইগ্রেনের ব্যথা হয় মাথার যেকোনো একপাশে। সাধারণত মধ্যবয়সে পৌঁছানোর আগেই এ অসুখ শুরু হয়। রোগী প্রচণ্ড ব্যথায় কষ্ট পান। মাথার একপাশে দপদপ করে। বমিভাব বা বমিও হতে পারে। রোগী এ সময় আলো ও আওয়াজ সহ্য করতে পারেন না। তাই এ সময় তিনি অন্ধকার ঘরে একা শুয়ে থাকতে পছন্দ করেন। একবার শুরু হলে ব্যথা একটানা ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে।
কোনো কোনো রোগীর মাইগ্রেন ব্যথা শুরু হওয়ার আগে কিছু বিশেষ লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন: চোখের সামনে রুপালি আঁকাবাঁকা রেখা দেখা, হঠাৎ খানিকক্ষণের জন্য দেখতে না পাওয়া, কথা বলতে অসুবিধা কিংবা শরীরের কোনো অংশ ঝিনঝিন করা বা অবশ লাগা। যেসব মাইগ্রেন রোগীর এমন লক্ষণ থাকে, তাঁদের ইস্ট্রোজেন বা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি না খাওয়াই ভালো।
মাইগ্রেনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারও কারও ক্ষেত্রে চকলেট, পনির বা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খেলে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়ে, তাঁরা নির্দিষ্ট ওই উপাদানটি এড়িয়ে চলুন।
আরেক ধরনের মাথাব্যথা নারীদের হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ব্যথার পাশাপাশি চোখের কিছু সমস্যা হয়। যেমন: একটি জিনিসকে দুটি দেখা বা শরীরের অবস্থান পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আকস্মিক চোখে দেখতে না পাওয়া। সাধারণত স্থূল বা বেশি ওজনের নারীদের এই সমস্যা হয়। ওজন কমাতে পারলে ব্যথা উপশম হয়ে থাকে।
যেকোনো মাথাব্যথার সঙ্গে জ্বর, শরীরের কোনো একপাশের দুর্বলতা বা ত্বকে ফুসকুড়ি বা র্যাশ; শোয়া অবস্থায় ব্যথার তীব্রতা বৃদ্ধি বা ঘুম ভেঙে মাথাব্যথা কিংবা যেকোনো ব্যক্তির আচমকা প্রচণ্ড মাথাব্যথা শুরু হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।