অন্দর সাজ -খাবার ঘরের সাজসজ্জা

ঘরের প্রতিটি জায়গা পরিকল্পনা করে সাজাতে হবে। কৃতজ্ঞতা: আনোয়ারা আনু, ছবি: নকশা
বাসনকোসন রাখার জন্য দেয়ালে একটা কাঠ বা বোর্ডের তাক তৈরি করে সেখানেই ক্রোকারিজ গুছিয়ে রাখতে পারেন। এর মাঝের অংশে মাইক্রোওয়েভ ওভেন, টোস্টার, কফি মেকার, জুসার প্রভৃতি রাখার ব্যবস্থা করতে পারেন। তাহলে বাইরে যাওয়ার সময় টুকটাক নাশতা বানিয়ে খেয়ে নিতে পারবেন চটজলদি। এই তাকের ওপরের অংশটা মার্বেল পাথরের তৈরি হতে পারে। এই তাকের ওপরের আড়াই ফুট অংশে কেবিনেট তৈরি করতে পারেন। কেবিনেটের সামনের দিকটা হতে পারে কাচের। স্লাইডিং কাচও লাগানো যেতে পারে। এখানে প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই উঠিয়ে রাখতে পারেন।
অন্য একটা দেয়ালের কাছে ফ্রিজ থাকতে পারে। রাখতে পারেন ছোট ট্রলিও। এতে করে অতিথি আপ্যায়নের সময় খাবার সাজিয়ে নিয়ে ড্রয়িং রুমে নিতে পারবেন সহজেই।
ফ্রিজ সাজানোর জন্য দারুণ সব চুম্বক পাওয়া যায় বাজারে। এই ডেকোরেশন পিস হতে পারে সবজি বা ফলের আকৃতির, কিংবা তা হতে পারে প্রজাপতি-ফড়িংয়ের আকৃতির। ফ্রিজের বাইরের অংশে চাইলে লাগিয়ে নিলেন।
টেবিলের মাঝখানে শতরঞ্জির মতো লম্বা কোনো মোটা কাপড় বিছিয়ে দিতে পারেন। পর্দা আর এই কাপড় একই রঙের হলে সুন্দর দেখাবে। চেয়ারে যদি কাভার লাগানো হয়, তাহলে এর সঙ্গেও পর্দা এবং টেবিলক্লথের রঙের মিল রাখা প্রয়োজন।
খাবার ঘরের কোনো একটি দেয়াল একটু ভিন্ন রঙের করতে চাইলে এই দেয়ালের রঙের সঙ্গে পর্দার রঙের মিল রাখলে ভালো দেখাবে। সমুদ্রের গভীরতার রং ও এর সঙ্গে কিছুটা সবুজ আভা (সি গ্রিন) বা কমলা রঙের হতে পারে দেয়ালটি। চাইলে দেয়ালে রাস্টিক টাইলসও লাগাতে পারেন। তবে কিছুটা অমসৃণ এই দেয়াল টেরাকোটার মতো দেখতে লাগে।
তৈজসপত্রের উপকরণের সঙ্গেও পর্দার মিল রাখা জরুরি। উৎসবের সময় মাটির তৈজসপত্রে খাবার পরিবেশন করা হলে গ্রামীণ চেক বা দেশজ উপকরণে তৈরি পর্দা ব্যবহার করুন। বিশেষ কোনো ধরনের তৈজসপত্র ব্যবহার করা হলে পর্দায় রাখতে পারেন নেটের ব্যবহার। চাইলে শুধু পেলমেটের নিচের অংশটুকুতে নেট লাগিয়ে নিতে পারেন।
খাবার ঘরের দেয়ালে পারিবারিক ছবি বা প্রাকৃতিক দৃশ্য না রেখে হাতে আঁকা ছবি রাখতে পারেন।
কিছুটা জায়গা পেলে আলাদা ছোট শেলফ রাখতে পারেন। ফুলদানিতে রাখতে পারেন প্রাকৃতিক ফুল। সুঘ্রাণ আছে, এমন ফুলই খাবার ঘরের জন্য ভালো। দোলনচাঁপা, রজনীগন্ধা বা সুন্দর ঘ্রাণের কোনো গোলাপ রাখতে পারেন এখানে। এর ফলে ঘরটিতে খাবারের বাড়তি কোনো গন্ধ থাকবে না। মোমবাতি জ্বালালে বাজে গন্ধ দূর হয়।
খাবার ঘরের আলোর বিষয়টিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ঝোলানো ল্যাম্পশেডও রাখতে পারেন, যেটির আলো নিয়ন্ত্রণ করা যায় সহজেই। প্রয়োজন হলে শুধু খাবার ঘরেই আলো থাকবে, অর্থাৎ অন্য ঘরগুলোতে আলো যাবে না, এমন ল্যাম্পশেডও রাখা যায়। চাইলে বেতের তৈরি ল্যাম্পশেডও রাখতে পারেন।
আজকাল খাবার ঘর এবং রান্নাঘরের মাঝে জানালাও রাখা হচ্ছে। এর ফলে রান্নাঘরের ওই জানালা দিয়ে সহজেই খাবার পৌঁছে দেওয়া যায় খাবার ঘরে। আড়াই ইঞ্চি বাই আড়াই ইঞ্চি চওড়া কাঠের ফ্রেমের জানালা রাখতে পারেন। আবার খাবার ঘরের একেবারে কাছেই খোলামেলা রান্নাঘরের ধারণাটাও ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
নবীনতর পূর্বতন