ঘুমাতে কে না ভালবাসে ? ঘুমের কথা শুনলেই
তো অনেকের ঘুম চলে আসে। তবে যাই
বলুন না কেন, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবার
জন্য ঘুমের অবদান অনস্বীকার্য। এজন্য
ডাক্তাররা নিয়মিত ৭ – ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর পরামর্শ
দিয়ে থাকেন।
আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত ঘুমানো অত্যন্ত
আবশ্যক। স্বল্প নিদ্রার কারণে আমাদের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে
পারে এবং পরবর্তীতে নানান জটিল রোগের
কারন হয়ে দাঁড়াতে পারে।
পরিমিত ঘুম আমাদের মস্তিষ্ককে সচল রাখতে
সহায়তা করে। ঘুমানোর সময় আমাদের দেহে
নিউরনের মধ্যে শক্তির সঞ্চার হয় আর ঘুম
অল্প হলে আমাদের স্নায়ুতন্ত্র সঠিকভাবে
কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে আমরা
কাজে ঠিকমতো মনোনিবেশ করতে পারি না।
স্বল্প নিদ্রার কারণে আমাদের মধ্যে ক্ষোভ
ও হতাশার সৃষ্টি হয়। এতে যেকোনো কাজে
ত্রুটির পরিমাণ বেড়ে যায় এবং আমরা খারাপ চিন্তা
ভাবনা করি।
আমাদের দেহে ক্ষুধার মাত্রা নিয়ন্ত্রন করে
“ ল্যাপটিন ” নামক প্রোটিন , আমরা যখন স্বল্প
নিদ্রায় ভুগি তখন আমাদের দেহে ল্যাপটিনের
পরিমাণ বেড়ে যায় এবং ক্ষুধা বেশি লাগে।
এজন্যই, আমরা যখন রাত জাগি , তখন আমাদের
ক্ষুধা পায়।
স্বল্প নিদ্রার কারণে উচ্চ রক্তচাপের সৃষ্টি
হতে পারে। এছাড়াও স্বল্প নিদ্রা
ডায়বেটিসের কারণ হয়েও দাঁড়াতে পারে।
তাছাড়াও ঘুমের মাধ্যমে আমরা ত্বকের বিভিন্ন
রোগের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সক্ষম।
বিশেষজ্ঞরা তাই সবসময়েই পরিমিত ঘুমের
পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাদের মতে নিয়মিত
একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আমদের
ঘুমাতে যাওয়া উচিত। ঘুমানোর আগে মাথা
থেকে দুশ্চিন্তা যথাসম্ভব দূরে রাখা দরকার।
একটি ভালো ঘুমের জন্য ঘুমাতে যাওয়ার
আগে ধূমপান হতে বিরত থাকা অত্যন্ত
প্রয়োজনীয়। ঘুমানোর জন্য সবসময় একটি
নীরব এবং শান্তিপূর্ণ স্থান বেছে নিতে
হবে।
স্বল্প নিদ্রা দূর করার জন্য বিশেষজ্ঞদের
মতে, দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে হবে
এবং ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার ( যেমন- বাদাম ) খেতে
হবে। এছাড়াও , কলা এবং দধি স্বল্প নিদ্রা
দূরীকরণে সহায়ক।
তবে খেয়াল রাখবেন , পরিমিত ঘুমের কথাই
কিন্তু আমি বলেছি। ঘুমের এত উপকারিতা
জেনে সারাদিন ঘুমাতে থাকলে সেটাও কিন্তু
বিপত্তি নিয়ে আসবে। স্বল্পনিদ্রা যেমন
শরীরের জন্য ক্ষতিকর , ঠিক তেমনি অধিক
নিদ্রাও শরীরের জন্য উপকার করেনা , বরং
অপকারটাই করে। অধিক নিদ্রার ফলে আপনার
অলসতা বৃদ্ধি পাবে , শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ –
প্রত্যঙ্গে মেজমেজ অনুভব করবেন এবং
শারীরিক দুর্বলতা বৃদ্ধি পাবে। এমনকি আপনার
যদি নিয়মিত অধিক নিদ্রা হয় , তবে সেটি আপনার
কোন শারীরিক সমস্যর লক্ষণ হিসেবেও
দেখা দিতে পারে। তাই অধিক ঘুম হলে সেটিও
আপনার জন্য চিন্তার কারণই বটে!