নিয়মিত সহবাস সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে

সহবাস বা যৌন মিলন বিভিন্ন ভাবে নারী পুরুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে থাকে । শরীর ভাল রাখতে সবচেয়ে ভাল উপায় যৌনতা উপভোগ এর মাধ্যমে প্রচুর কেমিক্যালের ক্ষরণ হয় যা মস্তিষ্ক ও হৃদয়ের পক্ষে স্বাস্থ্যকর৷ এছাড়াও যৌনতার অন্যান্য উপকারিতাও রয়েছে৷ যৌনতা রক্তের সংবহনকে বৃদ্ধি করে৷ এটি ত্বকে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি করে ফলে ত্বক অনেক বেশি স্বাস্হ্যজ্জ্বল হয়৷ নিয়মিত যৌন প্রবৃত্তি ত্বকে দীর্ঘ প্রভাব বিস্তার করে এবং এর ফলে আপনাকে দেখতে অনেক কম বয়সি বলে মনে হয়৷ যৌনতা সাধারন কোলাজেন উৎপাদন বৃদ্ধি করে, এটি মুখের বিভিন্ন বার্ধক্যজনিত দাগ থেকে মুক্তি দেয় এবং ত্বককে ঝুলে পড়তে দেয়না৷
সপ্তাহে ১ বা ২ বার যৌনকর্ম করলে তা শরীরে ইমিউনোগ্লোবিন এ নামক অ্যান্টিবডি উৎপাদন করে৷ এই অ্যান্টিবডি বিভিন্ন রোগ সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে৷ সুতরাং আপনি যতবেশি যৌনক্রিয়া করবেন তত বেশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে৷হরমোন যে শুধু সেক্স ড্রাইভ কে নিয়ন্ত্রণ করে তা নয়, এটি চুলের পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণ করে৷ গবেষণায় দেখা গেছে, যৌন চাহিদা পরিতৃপ্ত হলে, বিপাকীয় পুষ্টি গ্রহণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ফলে চুল স্বাস্থ্যজ্জ্বল ও ঘন হয়৷গবেষণায় দেখা গেছে যতবেশি যৌন সহবাস করা যায় পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা তত বৃদ্ধি পায়৷

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, মহিলাদের ক্ষেত্রে বীর্য শোষণের ফলে অবসাদ কম হয় এবং শক্তি বৃদ্ধি হয়৷ এছাড়াও বেদনাহীন প্রসবও হতে পারে৷ অবসাদ কমাতে সবচেয়ে কার্যকরী ওষুধ হল যৌনসহবাস৷ কারণ এর ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং এটি অবসাদের মাত্রাকেও কম করতে সক্ষম৷সহবাসের ফলে যে হরমোনের নিঃসরণ হয় সেগুলি যেমন ত্বকে স্বাস্থ্যজ্জ্বল রাখতে সক্ষম তেমনই হাত ও পায়ের নখকেও শক্ত করে৷ এর ফলে নখ ফাটা বা ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়৷
হৃদয়কে সুস্থ রাখতে সহবাসের বিকল্প নেই৷ গবেষণায় দেখা গেছে য়ে পুরুষ সপ্তাহে ২ বা তার বেশি সংখ্যকবার যৌনসহবাস করেন তার ক্ষেত্রে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কম৷ তাই বেশিদিন সুস্থ ভাবে বাঁচতে চাইলে যৌনতা আপনাকে সাহায্য করতেই পারে৷ ত্বকের ব্রণ কমাতেও সহবাস দারুণ কাজ দেয়৷ কারণ এটি শরীরে হরমোনের মাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখে এর ফলে রক্ত পরিশ্রুত থাকে এবং ত্বক এক্কেবারে পরিষ্কার থাকে৷ সহবাস সংবহন তন্ত্রকে উন্নত করে এর ফলে শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গে রক্তের সংবহন যথাযথ পরিমাণে হয়, এর ফলে শরীরে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং মানুষ স্বাস্থ্যবান থাকেন৷ সহবাসের ফলে অক্সিটোসিন নামক একপ্রকার কেমিক্যালের ক্ষরণ হয়, এটি এন্ডোরফিনকে বৃদ্ধি করে যার ফলে ব্যথা বিশেষত মাথা ব্যথার পরিমাণ হ্রাস পায়৷ এছাড়াও সহবাস বিভিন্ন ক্ষততে আরাম দিতেও সক্রিয়, এমনকি ডায়াবেটিক রোগীদের অনমনীয় ক্ষতকেও কমাতে সক্ষম৷
অনেক চেষ্টা করেও ওজন কমাতে পারছেন না তো ? সহবাস ওজন কমানোর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি৷ গবেষণায় দেখা গেছে, সহবাসের প্রতি ঘন্টায় প্রায় ১৭০ ক্যালোরি পর্যন্ত কমানো যায়৷ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সহবাসের জুরি মেলা ভার৷ গবেষণায় দেখা গেছে, ২০ বছর বয়সি পুরুষদের ক্ষেত্রে মাসে ৫ বার এবং তুলনামূলক বয়স্কদের ক্ষেত্রে মাসে ২১ বার বীর্যপাত প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়৷ এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত সহবাস স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সক্ষম৷
বীর্যে প্রচুর পরিমানে জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য খনিজ বর্তমান৷ শরীরে বীর্যের শোষণের ফলে এই পদার্থগুলি শরীরে প্রবেশ করে যা দাঁতকে সুস্থ রাখতে সক্ষম৷ এর ফলে সাদা ও সুস্থ দাঁত খুব সহজেই পাওয়া যায়৷ অত্যাধিক উত্তেজনার ফলে মস্তিষ্কে অক্সিটোসিনের ক্ষরণ হয় এটি ঘুমোতে সাহায্য করে৷ তাই যারা অনিদ্রার শিকার তাদের ক্ষেত্রে সহবাস খুব উপযোগী৷ অক্সিটোসিন মূলত প্রেমের হরমোন নামে পরিচিত৷ এটি মানুষকে বিশ্বাস ও একে ওপরের সঙ্গে আবদ্ধ হতে সাহায্য করে৷ দুজন মানুষ যত বেশি সহবাস করবেন তাদের অক্সিটোসিন তত বেশি আদান প্রদান হবে এবং এতে তাদের সম্পর্ক অনেক বেশি দৃঢ় হবে৷ এছাড়াও অক্সিটোসিন উদারতা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে৷ পরিতৃপ্ত সহবাস আত্ম সম্মান বৃদ্ধি করে৷ যখন আপনি নিজের সম্পর্কে ভাল অনুভব করবেন তখন যৌনক্রিয়া অনেক বেশি পরিমাণে পরিতৃপ্ত বলে মনে হবে।
নবীনতর পূর্বতন