এসইও (SEO) শেখার পর আপনি কিভাবে আয় করতে পারেন, তার কয়েকটি কমন উপায় দেখুন। না দেখলে আপনার লস!


SEO- Search Engine Optimization শেখার ক্ষেত্রে
নতুনদের মধ্যে আগ্রহের শেষ নেই। কারন এটি
তুলনামুলক ভাবে সোজা এবং অনলাইনে
আয়ের কথা বললেই সবার আগে চলে আসে SEO
এর নাম। আসলে এটি এমন একটি বিষয় যেটি
অনলাইনের প্রায় সকল সেক্টরের সাথেই
প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। আর এই জন্যই
অনেকেই এটি শেখার প্রতি বিশেষ আগ্রহ
প্রকাশ করে থাকে।
★ এসইও শেখার পর এসইও এর জ্ঞানকে কাজে
লাগিয়ে অনলাইন থেকে উপার্জনের কয়েকশ
রাস্তা রয়েছে। কিন্তু সেই রাস্তা
গুলোতে আপনি কিভাবে হাটবেন, এবং
কোন রাস্তায় গেলে আপনার জন্য সুবিধা
হবে সেগুলো আগে অবশ্যই ভাল করে জেনে
নিতে হবে। আর তাই চলুন এসইও-কে কাজে
লাগিয়ে আপনি কিভাবে অনলাইন থেকে
আয় করতে পারবেন তার কিছু সেরা উপায়
সম্পর্কে জেনে নিই।
★ ফ্রীল্যান্সিং করে আয়
করতে পারেনঃ
আমাদের দেশের শতকরা ৯৫ ভাগ লোকই মনে
করে থাকেন অনলাইনে আয় মানেই
ফ্রীল্যান্সিং বা আপওয়ার্ক, ফ্রীল্যান্সার
ইত্যাদি সাইটে কাজ করা। যদিও কথাটা
ঠিক নয়, কিন্তু আপনাদের খাতিরে এটাকেই
১ নম্বরে স্থান দিলাম। এসইও এর কাজটি
শেখার পরে আপনি প্রথমেই নিজেকে
ফ্রীল্যান্সার হিসেবে তৈরি করার
প্রস্তুতি নিতে পারেন।
এখন যদি বলেন ফ্রীল্যান্সিং আবার কি,
তাহলে সংক্ষেপে এককথায় বলতে হবে-
“এটা হচ্ছে এমন একটা পদ্ধতি যেখানে আপনি
অনলাইনের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে (যেমন-
আপওয়ার্ক.কম, ফ্রীল্যান্সার.কম ইত্যাদি)
অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানে বিভিন্ন
ক্লাইন্টের কাজ করতে পারবেন এবং সেই
কাজ করার বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করতে
পারবেন।”
যদি এইভাবে জব করে আয় করতে চান তাহলে
আপনাকে প্রথমে এই সকল ফ্রীল্যান্সিং
মার্কেটপ্লেস গুলোতে অ্যাকাউন্ট খুলতে
হবে। এরপর আপনার আপনি কি কাজ করবেন
সেই অনুযায়ী প্রোফাইল তৈরি করতে হবে।
এরপর Find Job সেকশন থেকে আপনি আপনার
পছন্দমত বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাজ খুজে
নিতে পারবেন। এবং যে কাজটি আপনি
করতে পারবেন বলে মনে হয় সেটা করার জন্য
ক্লাইন্টের কাছে আবেদন করতে হবে। এরপর
ক্লাইন্ট যদি আপনাকে তার কাজটি করার
যোগ্য মনে করেন তাহলে তিনি আপনাকে
কাজটি করার অনুমতি দিবে এবং এইভাবে
আপনি যদি কাজটি সফলভাবে করে দিতে
পারেন তাহলে ক্লাইন্ট আপনাকে টাকা
পরিশোধ করে দিবে। এবং সেই টাকা
আপনি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তুলতে
পারবেন। এই পুরো পদ্ধতি নিয়ে সময় হলে
পরে একদিন বিস্তারিত লিখব ইনশাআল্লাহ।
যাই হোক, দেশে প্রায় লাখক্ষানিক
ফ্রীল্যান্সার এইভাবে ফ্রীল্যান্সিং এর
মাধ্যমে অনলাইন থেকে উপার্জন করছে। এসইও
শিখে চাইলে আপনিও এইভাবে আয় করতে
পারেন।
★নিজের ওয়েবসাইটেই এসইও
করে স্থায়ীভাবে আয়
করতে পারেনঃ
একটি কোয়ালিটি ওয়েবসাইট হতে পারে
আপনার সারাজীবনের স্থায়ী উপার্জনের
মাধ্যম। এমন অনেকেই আছেন যারা তাদের
ওয়েবসাইট থেকে প্রতি মাসে কয়েকহাজার
ডলার উপার্জন করছে। কিন্তু এটা শুনতে যতটা
সহজ কিন্তু করতে ততটা নয়। এই ধরনের কাজের
জন্য আপনাকে অবশ্যই ভালমানের ওয়েবসাইট
তৈরি করতে হবে, এর পেছনে অনেক কাঠখড়
পোহাতে হবে। গুড কোয়ালিটির
ওয়েবসাইট আপনার জন্য হতে পারে স্বর্ণের
ডিম পারা হাসের মত, শুনতে অনেক হাস্যকর
মনে হলেও কথাটা সত্য। আপনি আপনার
বানানো ওয়েবসাইট থেকে গুগল
অ্যাডসেন্স, প্রোডাক্ট মার্কেটিং,
অ্যাফিলিয়েট করে প্রতি মাসে বেশভাল
উপার্জন করতে পারেন। অ্যাডসেন্স হচ্ছে
পৃথিবীর সবচাইতে জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন
মাধ্যম, যেখান থেকে আপনি আপনার
ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করিয়ে
সেখান থেকে আয় করতে পারেন। তবে এর
জন্য আপনার ওয়েবসাইটটিকে অবশ্যই ভাল
মানের এবং ভিজিটর সমৃদ্ধ সাইট হতে হবে।
কিন্তু যারা নতুন তারা আবার বলতে
পারেন, তাহলে ওয়েবসাইট পাব কোথায়?
এখন এসইও করার জন্য আপনাকে ওয়েবসাইট
বানানো শিখতে হবে না, আপনাদের
সুবিধার্থে আমাদের এসইও বাংলা
টিউটোরিয়াল এর মধ্যে আমরা ফ্রীতে
কিভাবে বিভিন্ন জায়গা থেকে
ওয়েবসাইট এবং ব্লগ খুলতে পারেন সেটি
দেখানো হয়েছে। এছাড়াও আপনারা
চাইলে একটু চেস্টা করলেই ফ্রীতে ব্লগার.কম
থেকে একটি ব্লগ তৈরি করে নিতে পারেন।
এছাড়াও, মনে রাখবেন যদি ওয়েবসাইট
থেকে আয় করতেই হয় তাহলে ভাল করে
চেস্টা করুন, করলে করলাম, না করলে নাই এমন
চিন্তা করলে এখানেই কাজ বন্ধ করে দিন।
কারন, স্প্যামিং এর দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে,
যদি কিছু করারই হয় তাহলে প্রোফাশনাল
চিন্তা করে করুন।
এই ক্ষেত্রে আমি আপনাদের রিকমেন্ড করব,
যদি ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে চান
তাহলে কিছু টাকা খরচ করে ডোমেইন
হোস্টিং কিনেই তারপর ওয়েবসাইট করে
সেটাকে নিয়ে কাজ করেন।
★★ মনে রাখবেন, ওয়েবসাইট করার সাথে
সাথেই আপনি আয় করতে পারবেন না,
ওয়েবসাইট থেকে আয় তখনই করতে পারবেন
যখন আপনার সাইটটি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং
আপনি আপনার সাইটে নিয়মিত ভিজিটর
পাবেন।★★
★ কিন্তু এইক্ষেত্রে এসইও কিভাবে
আপনাকে হেল্প করতে পারে, আপনার
ওয়েবসাইট থেকে উপার্জন করতে?
– হ্যা, আপনার করা ওয়েবসাইটের কোন মূল্যই
থাকবে না যদি আপনার সাইটে কোন
ভিজিটর না থাকে। ভিজিটরই হচ্ছে একটি
ওয়েবসাইটের প্রান। ভিজিটর ছাড়া সাইট
অচল। কারন, আপনি একটি ওয়েবসাইট করেছেন
যেখানে আপনি বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বিষয়
শেয়ার করেছেন কিন্তু সেটা কেউই দেখল
না, এতে করে আপনার কোনই লাভ হবে না
এবং সেখান থেকে উপার্জনও সম্ভব নয়। আর
তাই, এই ভিজিটর নিয়ে আসার জন্য
আপনাকে শতভাগ সহায়তা করবে এসইও। এসইও
এর সঠিক ব্যবহার আপনাকে বিভিন্ন সার্চ
ইঞ্জিন থেকে প্রতিনিয়ত প্রচুর পরিমাণ
ট্রাফিক আসতে পারে। যেটাকে কাজে
লাগিয়ে আপনি বিজ্ঞাপনসহ নানা
মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
★ লোকাল কাজ করে আয়
করতে পারেনঃ
অনেকেই বলে থাকেন লোকাল কাজ করে
নাকি কাজ হয় না। তাহলে আমাদের কথা
দিয়েই শুরু করছি, আইটি বাড়ি সাইট করার পর
থেকে এখন পর্যন্ত অনেক গুলো কাজের অফার
পেয়েছি আমরা। উপযুক্ত পেমেন্ট পেলে
আমরা অনেক গুলো প্রোজেক্ট করেও
দিয়েছি। এইরকম অনেক লোকাল কাজ
রয়েছে আমাদের দেশীয় মার্কেটেই। আপনি
এসইও শিখে সেই কাজ গুলোও করতে পারেন।
কারন, অনেক প্রতিষ্ঠানেরই এখন এসইও
ওয়ার্কার প্রয়োজন। আপনি চাইলে বিভিন্ন
কোম্পানির হয়েও কাজ করতে পারেন। এর
জন্য বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ, পেইজ ঘাটাঘাটি
করলেই এমন অনেক কাজ পেয়ে যাবেন
যেখানে এসইও ওয়ার্কার প্রয়োজন। যদিও
ইন্টারন্যাশনাল বাজারের থেকে এখানে
পেমেন্ট কম হবে কিন্তু আপনি যদি লোকালি
কাজ করে সুনাম অর্জন করতে পারেন তাহলে
এক সময় এখান থেকেও বেশ ভাল মানের আয়
করা সম্ভব।
সর্বোপরি, এসইও এর মাধ্যমে আপনি আপনার
মেধাকে গোটা বিশ্বের কাছে ছড়িয়ে
দিতে পারবেন। যেহেতু এটি হচ্ছে
অনলাইনে থাকা যে কোন কিছুকেই সার্চ
ইঞ্জিনের (যেমন- গুগল) সার্চ রেজাল্টে
নিয়ে আসা, তাই ইন্টারনেট জগতের সব কিছুই
প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এসইও এর সাথে
জড়িত। ইন্টারনেটকে ভিত্তি করে গড়ে ওঠা
বিলিয়ন ডলার বাজারের সিংহভাগ এসইও
এর সাথে জডিত। আর তাই এসইও শিখে শুধু
ফ্রীল্যান্সিং এর চিন্তা না করে এর
পাশাপাশি অন্যান্য কাজের মাধ্যমেও আয়
করার চিন্তা করুন। এসইও এর জ্ঞান শুধুমাত্র
ওডেস্ক (আপওয়ার্ক), ইল্যান্স আর
ফ্রীল্যান্সার.কম-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটা
দিয়ে আপনি আরও অনেক উপায়েই আয় করতে
পারেন। একটু ভাবুন, নিজের মেধাকে কাজে
লাগান। আজকে যাদের কথা বিভিন্ন পত্র
পত্রিকাতে দেখেন তারা কিন্তু
অধিকাংশই অনলাইনে বিজনেস চালিয়ে
এই পর্যায়ে এসেছে। আর তাই শুধু চাকরি বা
ফ্রীল্যান্সিং ই নয়, এবার অন্য কিছু কথাও
চিন্তা করুন। কিন্তু মনে রাখবেন, অনলাইনে
ব্যাবসা বা অন্যান্য মাধ্যমে আয় করার
জন্য প্রয়োজন ধৈর্য আর কঠিন পরিশ্রম। পরিশ্রম
ছাড়া ধৈর্য আর ধৈর্য ছাড়া পরিশ্রম দুটোই
মূল্যহীন। আশা করি পোস্টটি সবার উপকারে
আসবে ইনশাআল্লাহ।
নবীনতর পূর্বতন