রূপচর্চার
জন্য প্রতিনিয়তই বের হচ্ছে নতুন নতুন পদ্ধতি। আধুনিক যন্ত্রপাতি আর
বিভিন্ন উপাদান যোগ হচ্ছে সৌন্দর্যের চর্চায়। তবে বহু বছর আগে শুরু হওয়া
ভেষজ উপাদানের আয়ুর্বেদ সৌন্দর্যচর্চার আবেদন এখনো অটুট আছে। জটিল
জীবনধারায় এর গ্রহণযোগ্যতা বিন্দুমাত্র কমেনি বরং বেড়েছে। সৌন্দর্যচর্চা ও
সুস্থ জীবনধারায় এই পদ্ধতির গুনগান আজও সবার মুখে।
প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসাশাস্ত্রে যুক্ত হয় এই ধারা৷ আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভেষজ উদ্ভিদ, গাছের পাতা, ফল, নানা ধরনের বীজের তেল আর ছাল-বাকল হয়ে ওঠে এই চিকিৎসাধারার মূল উপকরণ৷ ভেষজ এই চিকিৎসা পদ্ধতি পরিচিতি পায় আয়ুর্বেদ নামে৷ আয়ুর্বেদ সংস্কৃত শব্দ, যার অর্থ জীবনের বিজ্ঞান৷
হলুদ, চন্দন, নিম, মেহেদি, মেথি, আমলকী এসব উপকরণের ব্যবহারে ত্বক ও চুল যে আরও সুন্দর হয়ে ওঠে তা তো সবারই জানা৷ আয়ুর্বেদে এগুলোর সংমিশ্রণেই তৈরি করা হয় নানা ধরনের স্ক্রাব ও ঔষধি তেল, যা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই চুল আর ত্বকে আনে সজীবতার ছোঁয়া৷ শুধু বাইরের পরিচর্যাই নয় আয়ুর্বেদে প্রাধান্য পায় শারীরিক সুস্থতার বিষয়টিও৷ রাজধানীর আয়ুর্বেদা রিসার্চ অ্যান্ড হেলথ সেন্টারের আয়ুর্বেদিক ডাক্তার শালিন ভাট্টি বলেন, বাতাস, পানি ও আগুন—এ তিনটি উপাদান মানুষের শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে৷ এর মধ্যে একটির অসামঞ্জস্য হলেই শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দেয়, যার প্রভাব পরে ত্বক ও চুলে৷ সাধারণত বাড়তি কাজের চাপ, দুশ্চিন্তা, রাতে ঘুমের ব্যাঘাত, অনিয়ম, বেশি তেল-মসলায় রান্না করা খাবার খাওয়া প্রভৃতি কারণে নষ্ট হয় শরীরের ভারসাম্য৷
আয়ুর্বেদ পঞ্চকর্মার মধ্য দিয়ে শরীরের ভেতরে থাকা রোগের উপসর্গগুলোকে বের করে আনা যায়৷ বোমেটিং থেরাপি (ওয়ানামা), লুজ মোশন (ভিরেচানম), এনিমা (ভাস্তি), নেজল থেরাপি (নাস্বিয়াম), ব্লাড লেটিং থেরাপি (রক্তমুখ সানামা)—এগুলোই হলো আয়ুর্বেদের পঞ্চকর্মা৷ ত্বক ও চুলের জটিল সমস্যায় কারণটা অনুসন্ধান করে আয়ুর্বেদ চিকিৎসার পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়৷ বাহ্যিক রূপচর্চার মতোই উপসর্গকে শরীরের ভেতর থেকে নির্মূল করতে নানা ধরনের হার্বস বা প্রাকৃতিক উপাদান যেমন নিম, মেহেদি, বহেরা, আমলকী, হলুদসহ আরও নানা ঔষধি উদ্ভিদের ব্যবহার করা হয়৷ শালিন ভাট্টি বলেন, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শরীরকে দুর্বল করে দেয়৷ কিন্তু আয়ুর্বেদে সে ভয় নেই৷ রূপচর্চার ক্ষেত্রেও সেই একই কথা৷ প্রসাধনীর ব্যবহারে ত্বকে তাৎক্ষণিক সৌন্দর্য ফিরে এলেও এর স্থায়িত্ব হয় খুব কম৷ অন্যদিকে আয়ুর্বেদে প্রতিক্রিয়াটা পেতে একটু সময় লাগে৷ কিন্তু এর প্রভাব ত্বক ও চুলে থাকে দীর্ঘ সময়৷ আয়ুর্বেদিক ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে ত্বক ও চুলের ধরন বুঝে প্রয়োগ করা হয় এসব পদ্ধতি৷ আয়ুর্বেদে ত্বক, চুলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখার পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ রাখার কিছু পদ্ধতির কথা বিস্তারিত বলেন হারমনি স্পা-এর আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা এবং আয়ুর্বেদা রিসার্চ অ্যান্ড হেলথ সেন্টারের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক শালিন ভাট্টি৷
হট স্টোনএ পদ্ধতিতে প্রথমে হাত, পা ও পিঠে ঔষধি তেল (সাধারণত সরিষার বীজ, তিলের বীজ, নারকেল তেল, কদম পাতা ও একাঙ্গি ব্যবহার করা হয়) দিয়ে মালিশ করা হয়। এরপর গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখা স্টোন দিয়ে শরীরে মালিশ করা হয়। হট স্টোন হাড়ের সংযোগের (জয়েন্ট) ব্যথা, পিঠের ব্যথা, আর্থ্রাইটিস জন্য বেশ উপকারী।
প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসাশাস্ত্রে যুক্ত হয় এই ধারা৷ আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভেষজ উদ্ভিদ, গাছের পাতা, ফল, নানা ধরনের বীজের তেল আর ছাল-বাকল হয়ে ওঠে এই চিকিৎসাধারার মূল উপকরণ৷ ভেষজ এই চিকিৎসা পদ্ধতি পরিচিতি পায় আয়ুর্বেদ নামে৷ আয়ুর্বেদ সংস্কৃত শব্দ, যার অর্থ জীবনের বিজ্ঞান৷
হলুদ, চন্দন, নিম, মেহেদি, মেথি, আমলকী এসব উপকরণের ব্যবহারে ত্বক ও চুল যে আরও সুন্দর হয়ে ওঠে তা তো সবারই জানা৷ আয়ুর্বেদে এগুলোর সংমিশ্রণেই তৈরি করা হয় নানা ধরনের স্ক্রাব ও ঔষধি তেল, যা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই চুল আর ত্বকে আনে সজীবতার ছোঁয়া৷ শুধু বাইরের পরিচর্যাই নয় আয়ুর্বেদে প্রাধান্য পায় শারীরিক সুস্থতার বিষয়টিও৷ রাজধানীর আয়ুর্বেদা রিসার্চ অ্যান্ড হেলথ সেন্টারের আয়ুর্বেদিক ডাক্তার শালিন ভাট্টি বলেন, বাতাস, পানি ও আগুন—এ তিনটি উপাদান মানুষের শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে৷ এর মধ্যে একটির অসামঞ্জস্য হলেই শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দেয়, যার প্রভাব পরে ত্বক ও চুলে৷ সাধারণত বাড়তি কাজের চাপ, দুশ্চিন্তা, রাতে ঘুমের ব্যাঘাত, অনিয়ম, বেশি তেল-মসলায় রান্না করা খাবার খাওয়া প্রভৃতি কারণে নষ্ট হয় শরীরের ভারসাম্য৷
আয়ুর্বেদ পঞ্চকর্মার মধ্য দিয়ে শরীরের ভেতরে থাকা রোগের উপসর্গগুলোকে বের করে আনা যায়৷ বোমেটিং থেরাপি (ওয়ানামা), লুজ মোশন (ভিরেচানম), এনিমা (ভাস্তি), নেজল থেরাপি (নাস্বিয়াম), ব্লাড লেটিং থেরাপি (রক্তমুখ সানামা)—এগুলোই হলো আয়ুর্বেদের পঞ্চকর্মা৷ ত্বক ও চুলের জটিল সমস্যায় কারণটা অনুসন্ধান করে আয়ুর্বেদ চিকিৎসার পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়৷ বাহ্যিক রূপচর্চার মতোই উপসর্গকে শরীরের ভেতর থেকে নির্মূল করতে নানা ধরনের হার্বস বা প্রাকৃতিক উপাদান যেমন নিম, মেহেদি, বহেরা, আমলকী, হলুদসহ আরও নানা ঔষধি উদ্ভিদের ব্যবহার করা হয়৷ শালিন ভাট্টি বলেন, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শরীরকে দুর্বল করে দেয়৷ কিন্তু আয়ুর্বেদে সে ভয় নেই৷ রূপচর্চার ক্ষেত্রেও সেই একই কথা৷ প্রসাধনীর ব্যবহারে ত্বকে তাৎক্ষণিক সৌন্দর্য ফিরে এলেও এর স্থায়িত্ব হয় খুব কম৷ অন্যদিকে আয়ুর্বেদে প্রতিক্রিয়াটা পেতে একটু সময় লাগে৷ কিন্তু এর প্রভাব ত্বক ও চুলে থাকে দীর্ঘ সময়৷ আয়ুর্বেদিক ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে ত্বক ও চুলের ধরন বুঝে প্রয়োগ করা হয় এসব পদ্ধতি৷ আয়ুর্বেদে ত্বক, চুলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখার পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ রাখার কিছু পদ্ধতির কথা বিস্তারিত বলেন হারমনি স্পা-এর আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা এবং আয়ুর্বেদা রিসার্চ অ্যান্ড হেলথ সেন্টারের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক শালিন ভাট্টি৷
হট স্টোনএ পদ্ধতিতে প্রথমে হাত, পা ও পিঠে ঔষধি তেল (সাধারণত সরিষার বীজ, তিলের বীজ, নারকেল তেল, কদম পাতা ও একাঙ্গি ব্যবহার করা হয়) দিয়ে মালিশ করা হয়। এরপর গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখা স্টোন দিয়ে শরীরে মালিশ করা হয়। হট স্টোন হাড়ের সংযোগের (জয়েন্ট) ব্যথা, পিঠের ব্যথা, আর্থ্রাইটিস জন্য বেশ উপকারী।
চক্রধারা
এ পদ্ধতিতেপ্রথমেই মাথায় ভালো করে তেল মালিশ করে নেওয়া
হয়। এরপর চিকন তোয়ালে দড়ির মতো পাকিয়ে কপালের ঠিক মাঝখান বরাবর বসানো
হয়। এবার ধারা যন্ত্র দিয়ে হার্বস সেদ্ধ পানি কপালে ঢালতে হবে। এভাবে
কিছুক্ষণ পানি দেওয়ার পর ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
চক্রধারা চুল পাকা, অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার পাশাপাশি নতুন চুল গজাতে
সাহায্য করে।
শিরোধারা
এই পদ্ধতিটিতেচক্রধারার মতোই তেল মালিশ করে নিতে হয়।
তোয়ালেটা চিকন করে কপালের মাঝখানে বসাতে হবে। এরপর ধারা যন্ত্র দিয়ে ভেষজ
(হার্বস) সেদ্ধ তোয়ালের নিচে ঢেলে দিতে হবে। শিরোধারা মেরুদণ্ডে ব্যথা,
পিঠের ব্যথা ও সংযোগ (জয়েন্ট) স্থানে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
বডি র্যাপ
এপদ্ধতিতে শরীরে ভালো করে তেল মালিশ করে প্যাক লাগিয়ে
কলাপাতায় মুড়ে দেওয়া হয়। প্যাকটি তৈরি করতে ব্যবহার করা হয় হলুদ, মুলতানি
মাটি, গুঁড়ো দুধ, টকদই ও পানি। আধা ঘণ্টা পর পাতাগুলো সরিয়ে একটি বড়
তোয়ালে দিয়ে ধীরে ধীরে প্যাকটি তুলে ফেলতে হবে। বডি র্যাপ লোমকূপের
গোড়ায় ময়লা দূর করে। ত্বকের পোড়া ভাব দূর করতে সাহায্য করে।
বাইরের সৌন্দর্য তখনই ভালোভাবে প্রকাশ পাবে, যখন ভেতর
থেকে আপনি সুস্থ থাকবেন। হাজার বছর ধরে চলে আসা আয়ুর্বেদ চর্চার মাধ্যমে
বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ—এই দুই সুস্থতাই ধরে রাখা সম্ভব।