উফফ! প্রেম কি অসম্ভব বেদনাদায়ক

একটা খবর হয়ত আপনার চোখে পড়েছে,
দুজন প্রেমিক প্রেমিকা পারিবারিক কোনও সমস্যার কারনে একসাথে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে।
খবরটা আমিও বিস্তারিতভাবে পড়িনি, জাস্ট হেডলাইনটুকু।
তবে এটা সত্যিই যে প্রেম করলে এমন অবস্থার মধ্যে পড়তেই হয়, মাঝে মাঝে মনে আসবেই এমন কথা।
আমারও এমন অবস্থা, তবে এখনও যে চলে যাইনি সেটা তো বুঝতেই পাছেন।

তো আজ আপনাদের এমনই একটা মর্মস্পর্শী গল্প আপনাকে শোনাব। চলুন শুরু করা যাক।

সুমি এখন নবম শ্রেণীতে পড়ে। 
প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার সময় ১টা ছেলে তার দিকে তাকিয়ে থাকে সে লক্ষ করে। ছেলেটির নাম সুমন।
সুমন প্রায় ১ বছর ধরে ভালবাসে সুমিকে, কিন্তু বলতে পারে না। 
কারণ সুমি খুব ধনী পরিবারের মেয়ে। আর সুমন গরিবের ছেলে।
আজ ১৪ ফ্রেব্রয়ারি। 
সুমন সাহস করে বললো,
"আমি তোমাকে ভালবাসি সুমি। যদিও আমি জানি তুমি আমায় ভালবাসতে পারবেন না।" কথাগুলো বলে সুমন চলে গেল।
এইভাবে একটা বছর চলে গেল। 
এখন দশম শ্রেণীতে সুমি। সে লক্ষ করে আজও সুমন তার জন্য রাস্তায় অপেক্ষা করে। 
সুমি আস্তে আস্তে সুমনের প্রেমে পড়ে যায়।
তাই একদিন সুমি বলেও দিলো তার মনের কথা।
দুজনের প্রেম চলতে লাগল ১ বছর। 
এই ১ বছরের মাঝে দু'জন কখনো একাকি দেখা করেনি, কেউ কারো হাত ধরে রাস্তাতেও চলেনি।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর সুমির বিয়ে ঠিক হয়ে যায়।
কিন্তু সুমি বিয়েতে রাজি না। কারণ সুমি সুমনকে ছাড়া আর কেউকে নিজের স্বামি হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে না। 
সুমি ফোন করল সুমনকে...
-হ্যালো সুমন।
-হ্যা বলো।
-তুমি আজ রাতে আমাকে নিয়ে পালিয়ে যেতে পারবে?
-কেন? হঠাৎ করে কি হল?
-আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে এই বলে সুমি কান্না করে ফেলল।
-কান্না করোনা সুমি, আমি তোমাকে নিয়ে যাব।
ওরা ঠিক তাই করলো। সকালে দুজন বিয়ে করে সুমনদের বাড়ি চলে আসলো। 
সুমনের পরিবার থেকে কোন সমস্যা নেই কিন্তু এদিকে সুমির পরিবার সব জেনে গিয়ে সুমনের নামে ও তার পরিবারের নামে পুলিশে কমপ্লেন করলো।
তবে সুমির বক্ত্যব্যের কারণে কোন কিছু হলো না সুমন ও তার পরিবারের। 
সুমির বাবা সুমিকে উদ্দেশ্যে করে বলল, "আজ থেকে আমার কোনো মেয়ে নেই।"
সুমির নামে ব্যাংকে বেশ কিছু টাকা ও জমি ছিল, তা সব তার বাবার নামে করে দিল।
সুমন সুমিকে বলল যে, সুমির বাবার টাকার প্রতি তার কোন লোভ নেই। 

ভালো যাচ্ছিলো তাদের জীবন।
সংসার ৭ মাস। সুমি গর্ভবতী, তার পেটে ৩ মাসের বাচ্চা। 
একদিন সুমির কাকা এসে বলল, "সুমন, সুমির মা খুব অসুস্থ সুমিকে দেখতে চাইছে, আমি দু'দিন পর ওকে দিয়ে যাব।"
সুমি বলল, "আমি সুমন কে ছাড়া যাব না।"
সুমন বলল, "যাও না, দুদিন পরই তো চলে আসবে।"
অনেক বোঝানোর পর রাজি হয় সুমি। 
সুমি অনেকক্ষণ ধরে সুমনকে জরিয়ে ধরে। 
সুমন সুমির কপালে চুমু দিয়ে বলে, "পাগলী বউ আমার।"
তারপর সুমির বাপের বাড়ি এসে যা হলো তা কল্পনা করা যায় না!
সুমির বাবা সুমিকে জোর করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে অজ্ঞান করে তার বাচ্চা নষ্ট করে দেয়।
তাকে দিয়ে জোর করে ডিভোর্স পেপারে সাইন করানো হয়।
ডাক্তার তার মা-বাবাকে বলে যে তাকে রেস্টে রাখতে।
আজ দুদিন সুমি কারো সাথে কথা বলে না, শুধু একা একা কাঁদে। 
সুমির দাদা - বাবা কেউ বাড়ি নেই। সুমির মা একটু পাশের বাড়ি গেছে। 
সুমি বাড়িতে একা নিজের ঘরের দরজা দিয়ে হাত কেটে রক্ত দিয়ে লিখলো, "এই পৃথিবীতে আমার আপন বলতে একজন আছে সে আমার সুমন। মা তুমি একটা মেয়ে হয়ে আমার স্বামীর ঘর ছাড়া করলে! তুমি এক মা হয়ে আমাকে মা হওয়া থেকে বঞ্চিত করতে পারলে?"
এতটুকু লিখেই সুমি আত্মহত্যা করে।
নবীনতর পূর্বতন